কলকাতা: দেশের মোট ৩২ টি বিধানসভা কেন্দ্রে হওয়ার কথা ছিল উপনির্বাচন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন শুধুই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে। আর তার ঠিক পরেই উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল, অর্থাৎ রবিবারই বেশ কয়েকদিনের জন্য উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় সফরে যাওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু শনিবার কমিশন ভবানীপুরে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পরই সেই সফর বাতিল করা হয়েছে। এমনটাই খবর সূত্রের।
মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যে রাজ্যে বিশেষ বিমান আনা হয়েছে, সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল রাজনৈতিক মহল। সেই বিশেষ বিমানে চেপেই ৫ সেপ্টেম্বর বাগডোগরার উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল মমতার। ফেরার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন এবং জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে নির্বাচন ঘোষণা হতেই সেই সফর বাতিল করেন তিনি।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ সফরে একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। জেলাভিত্তিক বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক বৈঠকও করার কথা ছিল। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বৈঠকগুলি হবে, জানানো হয়েছিল এমনটাই। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরের জন্য কী ঘোষণা করেন তা নিয়ে জল্পনাও উঠেছিল তুঙ্গে। কিন্তু ভোট যে বড় বালাই। তিনি সপ্তাহখানেকের জন্য চলে গেলে হবে কী ভাবে! ভবানীপুরে যে তিনিই প্রার্থী। তাঁর জন্যই কমিশনের কাছে এত দরবার তৃণমূলের। তাই ভোট ঘোষণা হতেই সব ধরনের কর্মসূচিতে আপাতত ইতি টানলেন মমতা। তিনি আগামিকাল উত্তরবঙ্গে গেলে বিধানসভা ভোটের পর এটাই হত তাঁর তৃতীয় সফর।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস বা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সফর বাতিলের কোনও নির্দিষ্ট কারণ ঘোষণা করা হয়নি। উত্তরকন্যায় যে প্রশাসনিক বৈঠকগুলির আয়োজন হওয়ার কথা ছিল, সেটা কবে হবে তা নিয়েও একটা বড় প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। যদিও সূত্র জানাচ্ছে, আগামী ৩ অক্টোবর উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে। তারপরই দুর্গা পুজোর ছুটি পড়ে যাচ্ছে। ফলে পুজোর ছুটি মেটার পরই মুখ্যমন্ত্রী একেবারে উত্তরবঙ্গ সফরে যেতে পারেন, এমন একটা জল্পনাও শোনা গিয়েছে। বলাই বাহুল্য, এই জল্পনায় এখনও কোনও পক্ষ সিলমোহর দেয়নি।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশ শুধুমাত্র ভবানীপুরে ভোট ঘোষণা করার সিদ্ধানে বেজায় অসন্তুষ্ট বিজেপি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন ছুড়ে জানতে চান, “আমরা চিন্তায় আছি। হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন? তাহলে বাকি কেন্দ্রে কেন নয়?” রাজ্যের সহ-সভাপতি শমী ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বিজেপি চায় প্রত্যেক নির্বাচন। সে পৌর নির্বাচন হোক আর বিধানসভা ভোট। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যেভাবে বেছেবেছে নির্বাচন ঘোষণা করল, তা তামাশা ছাড়া কিছু নয়।” তৃণমূল যদিও ফুরফুরে মেজাজে ইতিমধ্যেই ভোটপ্রচারে নেমে গিয়েছে ভবানীপুরে। আরও পড়ুন: ‘হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন ভোট? কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে’