‘হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন ভোট? কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে’

মোট পাঁচ আসনে বাকি আছে উপ নির্বাচন। কেন শুধুমাত্র ভবানীপুরকেই বেছে নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিলীপ ঘোষ।

'হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন ভোট? কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে'
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2021 | 2:31 PM

কলকাতা: ‘আমরা চিন্তায় আছি। হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন? তাহলে বাকি কেন্দ্রে কেন নয়?’ ভবানীপুরের উপ নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার এমনটাই বললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুধু তাই নয়, কমিশন প্রভাবিত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির তরফে প্রশ্ন তোলা হবে, তবে কমিশনে এই নিয়ে কোনও চিঠি দেওয়া হবে কি না, তা স্পষ্ট করেননি বিজেপি নেতা। তাঁর দাবি, উপ নির্বাচন যখন হচ্ছে, তখন সবকটি কেন্দ্রেই হওয়া প্রয়োজন ছিল। উপ নির্বাচনের পরিবেশ এই মুহূর্তে রাজ্যে নেই, এই দাবি নিয়ে আগেই বিজেপির তরফে কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, উপ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় মান্যতা পেয়েছে রাজ্যের দাবি।

আজ, শনিবার ভবানীপুর কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে। এই কেন্দ্র থেকেই লড়বেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন মমতা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, একুশের নির্বাচনে মমতার দীর্ঘদিনের কেন্দ্র ভবানীপুরে লড়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তিনি। কিন্তু করে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন শোভনদেব। তাই এই ভবানীপুরে কেন্দ্রের দিকেই এই মুহূর্তে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। আর আজ দেশের একাধিক কেন্দ্রে উপ নির্বাচন বাকি থাকলেও শুধুমাত্র ভবানীপুরের জন্যই দিন ঘোষণা করেছে কমিশন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বত ভোট হবে সেই কেন্দ্র, ৩ অক্টোবর হবে গণনা। এ ছাড়া সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরেও ভোট হবে ওই দিন।

কমিশনের এই ঘোষণার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা চিন্তায় আছি। হঠাৎ ভবানীপুরেই কেন ভোট হবে? তাহলে বাকি কেন্দ্রে কেন নয়?’ এ দিন কমিশনের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবিধানিক প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন ঘোষণা করা হল। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী বিধায়ক না হতে পারলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সরকার চলছে, তাহলে সাংবিধানিক সংকট কেন তৈরি হবে? কী উদ্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এখনও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়নি। যানবাহন ঠিক মতো চলছে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতেই পারি।’ তিনি এ দিন জোর দিয়ে বলেন, ‘কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে আমরা্ জানতে চাইব কেন এটা হয়েছে।’

উপনির্বাচনের পরিস্থিতি নেই, তাই আয়োজন করা যাবে না বলে আগেই চিঠি দিয়েছিল বিজেপি। এর পিছনে মূলত ৮ টি কারণও সামনে আনে বঙ্গ বিজেপি। তাদের দাবি ছিল, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি চলছে, লোকাল ট্রেন চলছে না। রাজনৈতিক হিংসার ঘটনাও ঘটছে। তাই ভোট হওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘আমি কমিশনকে নিয়ে কিছু বলতে রাজি নই। ওনার ওপরে কথা বলা যায় না। সেটুকু আমাদের জানা আছে। আমি কী বলেছি জানা নেই। না জেনে কিছু বলব না।

বিজেপির সুরে সুর মিলিয়েছে সিপিএমও। বাম নেতা রবীন দেব বলেন, ‘এমনটা আগে কখনও হয়নি।’ তাঁর দাবি, ভবানীপুর নিয়ে যদি সাংবিধানিক সংকট হয়, তাহলে খড়দা কেন্দ্রের জন্যও একই যুক্তি প্রযোজ্য। সেখানে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর মারা গিয়েছেন। তাই একই যুক্তিতে সেখানেও আগে ভোট হওয়া উচিৎ ছিল বলে মনে করেন তিনি। আরও পড়ুন: West Bengal By-Election: শুধুমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করল কমিশন