কলকাতা : প্রশাসনের পাশাপাশি এবার সংগঠনেও জোর দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কালীঘাটে দলীয় সাংসদদের নিয়ে হওয়া বৈঠকে এই বার্তাই দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, সংগঠনের কাজকর্মে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তিনি। তাই মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি, সংগঠনের দিকেও নজর দিতে চাইছেন তিনি। সাংসদদের সেই বার্তাই দিয়েছেন এ দিন। জানিয়েছেন, তাঁর হাতে প্রশাসনিক কাজের অনেক চাপ রয়েছে, তবুও সংগঠনে নজর দেবেন তিনি।
একদিকে পুরভোটের প্রস্তুতি চলছে সব শিবিরে। সেই উত্তাপের মাঝেই তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচন আসন্ন। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের অন্দরে নির্বাচন। তার আগে মমতার এই সিদ্ধান্ত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে ২ তারিখের নির্বাচনের পর আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই নতুন কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করবে তৃণমূল। দলের চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে। পাশাপাশি, বুথ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি ক্ষেত্রে হবে এই নির্বাচন। দলের অন্দরে বড়সড় রদবদল হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে মাথাচাড়া দিতে দেখা গিয়েছে বিতর্ক। দলের শীর্ষস্তরের নেতাদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়িও প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। যদিও দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে, সেই বিতর্কে ইতি পড়ে। কড়া বার্তাও দেওয়া হয় সব নেতাদের। আর তারপরই সংগঠনে নজর দেওয়ার বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই বিতর্ক দলের ভাবমূর্তিও ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই বিতর্কের পরই সংগঠন নিজে দেখার কথা বলছেন মমতা।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই অভিষেকের ‘ব্যক্তিগত মত’ মন্তব্যের বিরোধিতা করে মন্তব্য করেছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। পরে সেই বিতর্কে মুখ খোলেন অনেকেই। প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। বিতর্কের রেশ ধরে মুখ খোলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রও। তাতেই অস্বস্তি বাড়ে শাসকদলের। পরে পার্থ জানান, শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাঁরা এই ধরনের বিবৃতি দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কমিটি কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে। দলের বাইরে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়।
বিধানসভা নির্বাচন বা কলকাতা পুরভোটে ঘাসফুলের সাফল্য এখন আর যথেষ্ট নয়। গোয়া, ত্রিপুরার মতো একাধিক রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করছে তৃণমূল। সর্বভারতীয় স্তরে জায়গা করে নেওয়াই এখন মমতার মূল লক্ষ্য। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে মোদীর সঙ্গে সম্মুখ-সমরে নামতে চান মমতা। চলছে সেই প্রস্তুতি। তাই এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মমতা অন্য কারও ওপর দলের রাশ ছাড়তে চাইছেন না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন : Covid Bulletin: রাজ্যে কমল দৈনিক সংক্রমণ, কলকাতাতেও নেমেছে সংক্রমণের গ্রাফ
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar: ‘রাজ্যপালের ভূমিকা ভয়ঙ্কর’! সংসদে অপসারণের প্রস্তাব নিয়ে ভাবনাচিন্তার ইঙ্গিত সুদীপের