কলকাতা : রাজ্যে এখন তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। আর শুরু থেকেই যে দুই ইস্যু নিয়ে বিরোধীদের থেকে বার বার খোঁচা খেতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে, তা হল – শিল্পবিমুখ মনোভাব এবং রাজ্যের বেকারত্ব। এবার সেই দুই ‘তকমা’ ঘোচাতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্ন সভাঘরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কথা থেকেই তা স্পষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভবিষ্যতে বাংলাই হতে চলেছে শিল্পের ডেস্টিনেশন।” এর জন্য তাঁর লক্ষ্য এবার শিল্প গড়ে তোলা, পরিকাঠামোগত সুবিধা গড়ে তোলা, বিনিয়োগ টানা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এই চার মূলমন্ত্রের কথাই বুধবার রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে কিষান বন্ধু, প্রতিটি সামাজিক কাজ আমরা আগেই করে দিয়েছি। এবার আমরা শিল্প ও কর্মসংস্থানের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যেই অনেকটা করেছি। (রাজ্যে) প্রায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। তা সত্ত্বেও আরও শিল্প তৈরি হবে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এখনই বাংলা একাধিক বিষয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছে। এছাড়ায় বাংলায় যে সংখ্যক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প রয়েছে, অন্য কোথাও নেই। অর্থনৈতিক ক্ষেত্র রাজ্যের জিএসটি থেকে আয় বেড়েছে। এই অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে আরও শিল্প প্রয়োজন।”
আগামী দিনে বাংলায় সবথেকে বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে, এই আশাই করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিগত দশ বছরে ৪.৫ লাখ কোটি বিনিয়োগ করা হয়েছে শিল্প ক্ষেত্রে। এবার বেশ কিছু বড় প্রকল্প রয়েছে আগামী দিনে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এই শিল্প প্রকল্পগুলি রাজ্যের শিল্পের সামগ্রিক চিত্রকে বদলে দেবে। তাজপুর বন্দরের বিষয়ে ইতিমধ্যেই টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে এতে এবং অনেক ছেলেমেয়ের চাকরিও হবে।”
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “দেউচা পাঁচামিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে এবং এক লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই আমরা ১০ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্যাকেজও করে দিয়েছি। ৪ হাজার ৩০০ জমি মালিক আছেন। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন জমি দিতে সম্মত হয়েছেন। তার সঙ্গে আমাদের নিজেদের জমিও আছে অনেকটা। আমরা শুরু করব নিজেদের জমি দিয়ে।” এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এখানে নির্মাণ শিল্প, নির্মাণের যন্ত্রাংশ, ফুড প্রসেসিং সহ বিভিন্ন শিল্প হবে।
বাদ নেই জঙ্গলমহলও। সেখানেও ৭২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আসছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রেও প্রচুর কর্মসংস্থানের আশা করছেন তিনি। এখানেও প্রায় ৪ হাজার একর জমি রয়েছে। ডানকুনি থেকে অমৃতসর ফ্রেট করিডরের মধ্যেই এটি পড়ে। এর পাশাপাশি ওএনজিসির অশোকনগরের তেলের প্ল্যান্টের কথাও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : AMTA Student Death: ‘আনিস-কাণ্ডে পুলিশের ২ জন গ্রেফতার’, নবান্ন থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী