কলকাতা: ‘লোগোটা আমি তৈরি করেছিলাম। আমিই সরকারকে দিয়েছি। তার জন্য কোনও টাকা নিইনি। সরকারি স্কুলে সরকারের লোগো থাকলে সমস্যাটা কোথায়?’ সরকারি স্কুলে নীল সাদা ইউনিফর্ম ও জামায় লাগানো বিশ্ব বাংলার লোগো-বিতর্ক প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “সরকার জামা তৈরির কাপড়টাও কিনে দিচ্ছে। কেন স্কুল ড্রেসে বিশ্ব বাংলার লোগো ব্যবহার করবেন? কে যেন একটা কেস করে দিয়েছে। আমি কোর্টের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু বলুন তো আমি আমার বাংলার নামটাকে ভুলি কী করে?”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিষ্কার কথা, “আর এটা তো প্রাইভেট স্কুলের জন্য নয়, সরকারি স্কুলের জন্য। যেখানে আমরা বিনা পয়সায় ড্রেস দিই, জুতো দিই। তাদের একটা সরকারের লোগো থাকবে না? জামা প্যান্টটা পাচ্ছে কোথা থেকে তারা? তারা তো বিশ্ব জুড়ে বাংলার নামটা বলবে, গর্ব করবে..এটা তো গর্ভমেন্টের ব্র্যান্ড।”
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই লোগো বিতর্ক পৌঁছেছে আদালতে। সরকারি নির্দেশিকা চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক মামলাকারী। সেই প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, “কে একটা কোর্টে দিয়ে বলে দিল, ওটা নাকি তৃণমূলের লোগো। খোঁজই রাখে না। সবেতেই তৃণমূলের দোষ। লোগোটা আমি তৈরি করেছিলাম। আর তৈরি করে ওটা বাংলা সরকারকে দিয়েছিলাম। আইন করে ওটা বাংলা সরকারের কাছে আছে।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা আমি নিজে এঁকে বাংলা সরকারকে দিয়েছি। যত লোগো, ম্যাক্সিমাম লোগো আমার করে দেওয়া। তার জন্য আমরা পয়সা নিই না।”
প্রসঙ্গত, স্কুলের পোশাকে বিশ্ব বাংলা লোগো নিয়ে বর্তমানে যে জলঘোলা চলছে, তাতে প্রথমবার প্রকাশ্যে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিষয়টি উত্থাপিত হয় বিধানসভাতেও। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার ব্যাখ্যা দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “বিশ্ব বাংলা লোগো কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিরও সম্পত্তি নয়। এটা সরকারের প্রতীক। বাংলাকে বিশ্বস্তরে উন্নীত করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত।”
ব্রাত্যর আরও ব্যাখ্যা, “মন্ত্রীর প্যাড থেকে শুরু করে সরকারি যে কোনও অনুষ্ঠানে বিশ্ব বাংলার লোগো ব্যবহার করা হয়। এই লোগো রাজ্যকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। সব বিষয়ে রাজনীতি না করে এটা অন্তত সমর্থন করা উচিত।”