কলকাতা : জোড়া অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার থেকে উত্তাল কেষ্টপুর তথা বাগুইআটি থানা এলাকা। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই কিশোরের পরিবার ও এলাকার মানুষ। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় ওসি-কে ক্লোজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার প্রশাসনিক বৈঠকে সরাসরি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বুধবার নবান্নে বৈঠক চলাকালীন ডিজি সহ একাধিক আধিকারিকের সামনেই পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা।
গত ২২ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল কেষ্টপুরের ওই দুই কিশোর। পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পরও কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে দাবি পরিবারের। অভিযোগ, বসিরহাটের মর্গে দুই সপ্তাহ ধরে পড়েছিল তাদের মৃতদেহ। তারপরও ঘটনাটা সামনে আসতে এত সময় লেগে গেল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার রাতে দুই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পর মৃত কিশোর অতনুর বাবা সিবিআই তদন্তের দাবি করেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। আঙুল তুলছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও। এই আবহেই বৈঠকের মাঝে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন অবহেলা করা হল? কেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলছে? কেন কোনও রকম পদক্ষেপ করা হল না? কেন ১৩ দিন নিখোঁজ থাকার পরেও সিআইডি মিসিং স্কোয়াডকে বিষয়টা জানানো হল না?
এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা সহ পুলিশের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সূত্রের খবর, তাঁদের সামনেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইসিকে সাসপেন্ড করা উচিত তোমাদের।
মঙ্গলবার ঘটনাটি সামনে আসার পর গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। তবে মূল অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনও। পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কেন পুলিশ সদর্থক ভূমিকা নিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কেনার জন্য ২২ অগস্ট বাড়ি থেকে বের হয় অতনু ও অভিষেক নামে ওই দুই ছাত্র। সত্যেন্দ্র তাদের রাজারহাটে নিয়ে যায়, এরপর গাড়ির মধ্যে তাদের খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, কেষ্টপুর-কাণ্ডে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে মৃত দুই ছাত্রের পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক স্থানীয় নেতাদের ফোন করে এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।