কলকাতা: একটি কোম্পানি রয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের নামে। আর তাতে মিলেছে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। মঙ্গলবার আদালতে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির বিরুদ্ধে এমনই একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিকের নাম জড়িয়েছিল আগেই। সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করার পর মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হলে, তাঁকে ১৪ দিনের হেফাজতে নিতে চেয়েছে ইডি। আদালতে চিঠি ও সিডি উদ্ধার হওয়ার কথাও উল্লেখ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা।
এ দিন আদালতে মানিকের পক্ষে আইনজীবী দাবি করেন, অ্যারেস্ট মেমো পাওয়া যায়নি। পরিবারকে দেওয়া হয়নি। ইডি জানান, অভিযুক্তকে দেওয়া হয়েছে অ্যারেস্ট মেমো। বিচারক উল্লেখ বলেন,’নোটে দেখছি অ্যারেস্ট মেমো নিতে চাননি।’
ইডি জানিয়েছে, এই মানিকের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন একটা সংস্থার নাম পাওয়া গিয়েছে। মানিকের ছেলে সেটির মালিক। ২.৬৪ কোটি কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে ওই কোম্পানির অ্যাকাউন্টে। বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ওই সংস্থার এগ্রিমেন্ট ছিল বলেও জানিয়েছে ইডি।
ওই সংস্থা সম্পর্কে ইডি-র আরও দাবি, ৫১৪ টি বিএড ও বিএ কলেজ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল পরিষেবা দেওয়ার জন্য, কিন্তু কোনও পরিষেবা দেওয়া হয়নি। এই লেনদেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ইডি।
আর কী কী পেল ইডি? কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, তল্লাশিতে একটি সিডি পাওয়া গিয়েছে, যাতে দুটি ফোল্ডার আছে। তাতে রয়েছে ৫৫ জনের নামের তালিকা। তাঁদের নিয়োগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইডি। একটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে ইডি-র তরফে।
ইডি-র আইনজীবী এ দিন বলেন, ‘যাঁরা যোগ্য নয় তাঁরা এখন স্কুল কলেজে পড়াচ্ছেন। কী হবে এই রাজ্যের ভবিষ্যত? এখনও অনশন করছেন যোগ্যরা। যাঁরা যোগ্য অথচ টাকা দিতে পারেননি তাঁদের চাকরি হয়নি। যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁদের চাকরি হয়েছে।’
অন্যদিকে, মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত জানান, সোমবার সকাল ১০ টায় ইডি দফতরে গিয়েছিলেন মানিক। তাঁকে তলব করা হয়েছিল, কিছু ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল।
এ দিন আইনজীবী জামিনের আবেদন করেননি, তবে আর্জি জানানো হয়, মানিকের সহযোগিতার কথা মাথায় রেখে যাতে ইডি-র আবেদন খারিজ করা হয়। আত্মীয়দের জমি, সম্পত্তির তথ্য জমা দেওয়া আছে বলেও উল্লেখ করেন মানিক। পাশাপাশি,মানিকের দাবি, ব্যাঙ্কের সব তথ্য পেশ করেছেন তিনি। তাঁর সব পেমেন্ট চেকে হয়েছে। বেআইনি লেনদেন হলে চেকে পেমেন্ট হত না বলেও দাবি মানিকের। পাশাপাশি, আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে মানিকের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর নেই।