সুজয় পাল: দিল্লির রোহিনী কোর্টে (Rohini Court) শুট আউটের (Shoot Out) পর এবার কলকাতার আদালত গুলির নিরাপত্তা নিয়ে শুরু হল তৎপরতা। আদালতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের যাতায়াত। তাই আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে যে ভাবে দিল্লি রোহিনী কোর্টের অন্দরেই গুলি চলে, তাতে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সেই কারণেই কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল।
আজ মঙ্গলবার সেই বৈঠক বসেছে বিচার ভবনে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের (Bankshal Court) মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান সহ একাধিক কর্তা। রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারও। আদালতের ভিতরে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তা নিয়েই এই বৈঠক।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিচার ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক ফ্লোরে মেটাল ডিটেক্টর, সদর দরজায় ব্যাগেজ স্ক্যানার এবং প্রত্যেক ফ্লোরে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিচারভবনের তরফে। আজ বিকেল ৪টে থেকে এই বৈঠক শুরু হয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচারকের নেতৃত্বে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর, দিল্লির রোহিনী কোর্টে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। আদালতের ভিতরেই তাণ্ডব চালায় গ্যাংস্টাররা। রোহিণী আদালতে একটি মামলার শুনানি চলাকালীন হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। এলোপাথাড়ি গুলিতে জিতেন্দ্র গোগি নামে এক গ্য়াংস্টার সহ কমপক্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে পুলিশের গুলিতেও ২ আততায়ীর মৃত্যু হয়। কুখ্য়াত গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র গোগিকে সে দিন আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে কাঠগড়ায় তুলতেই খুব কাছ থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরাও গুলিবিদ্ধ হয়। ওই গ্যাংস্টার সহ কমপক্ষে তিন জনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। এরপরই আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।
উল্লেখ্য, দেশের আইন সংক্রান্ত পরিকাঠামো নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমন। পরিকাঠামোর জন্যই বিচার ব্যবস্থায় খামতি থেকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এক অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে উপস্থিত হয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ‘দেশের মাত্র ভারতের মাত্র ৫ শতাংশ আদালতে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।’ পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, দেশের অন্তত ২৬ শতাংশ আদালতে মহিলাদের জন্য আলাদা শৌচাগার নেই, ১৬ শতাংশ আদালতে পুরুষদের জন্য কোনও শৌচাগারই নেই। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ৫০ শতাংশ আদালত চত্বরে নেই কোনও লাইব্রেরি। ৪৬ শতাংশ আদালতে জলের বিশুদ্ধিকরনের কোনও ব্যবস্থা নেই।