Mid-Day Meal: চালেই বে-চাল! ১৮ মাস ধরে মিড-ডে মিলের চাল পেলেন না ৪০ লক্ষ পড়ুয়া

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Nov 12, 2021 | 3:19 PM

Education: উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়া পিছু দৈনিক  ১৫০ গ্রাম চাল রাজ্যকে দেয় কেন্দ্র। মাসে ২২ টি কাজের দিন ধরে প্রত্যেকের পাওনা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল। মাসে পড়ুয়ারা মাথা পিছু পেয়েছেন ২ কেজি চাল।

Mid-Day Meal: চালেই বে-চাল! ১৮ মাস ধরে মিড-ডে মিলের চাল পেলেন না ৪০ লক্ষ পড়ুয়া
প্রতীকী ছবি,

Follow Us

কলকাতা: রাজ্যকে প্রদত্ত অর্থ খরচে বাধ্য করানো নাকি অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে বলে বিশেষ নজরদারি— বিতর্ক বরাবর রয়েছেই। মূল উদ্দেশ্য যা-ই হোক, স্কুলপড়ুয়াদের খাবার বাবদ খরচে নজরদারির রাস্তায় বরাবর হাঁটতে চেয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু শেষ রক্ষা হল কই? পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলছে। মিড ডে মিলের বরাদ্দ চাল সঠিক পরিমাণে পাচ্ছে না পড়ুয়ারা। যে চাল দেওয়ার কথা তত পরিমাণ চাল দেওয়া হচ্ছে না এই রাজ্যে। এমনই অভিযোগ এক শিক্ষক সংগঠনের।

করোনাকালে লকডাউনের জেরে স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ প্রায় বছর দেড়েক। ফলে বন্ধ ছিল মিড ডে মিল। তাই পড়ুয়াদের মধ্যা চাল বিতরণ করা হয়েছে। অভিযোগ, রাজ্যে বরাদ্দের কম পরিমাণ চাল পড়ুয়াদের দেওয়া হয়েছে। কত কম দেওয়া হয়েছে চাল? হিসেব কষেই দেখা যাক।

সূত্রের খবর, উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়া পিছু দৈনিক  ১৫০ গ্রাম চাল রাজ্যকে দেয় কেন্দ্র। মাসে ২২ টি কাজের দিন ধরে প্রত্যেকের পাওনা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল। মাসে পড়ুয়ারা মাথা পিছু পেয়েছেন ২ কেজি চাল। একটি-দুটি স্কুলে নয়। রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলেই সেই পরিমাণই বরাদ্দ। অর্থাত্‍, মাসে পড়ুয়াপিছু ১ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল কম দেওয়া হয়েছে। গলদের এখানেই শেষ নয়, পরিসংখ্যান বলছে মোট ৪০ লক্ষ পড়ুয়া ১৮ মাস ধরে চাল পায়নি। মোট ৯ কোটি ৩৬ লক্ষ কেজি চাল কম বিতরণ হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে এই কম বিতরণ হওয়া চাল আসলে কোথায় গিয়েছে?

এক শিক্ষক সংগঠনের নেতার কথায়, “ছেলেমেয়েদের চাল দেওয়ার কথা। দেওয়া হবে না কেন! গোডাউন থেকে স্কুলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কাছে সরাসরি চাল পেয়ে যাওয়ার কথা। তাহলে কেন সেই চাল দেওয়া হচ্ছে না? কেনই বা ছেলেমেয়েরা চাল পাবে না!” এবিটিএ শিক্ষক সংগঠনের নেতা সুকুমার পাইনের কথায়, ”মাথাপিছু প্রতি পড়ুয়ার জন্য ১৭০ টাকা বরাদ্দ। সেখানে ১৭০ টাকার বদলে কেন কম টাকার চাল দেওয়া হবে! এ নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। সবমিলিয়ে ১৪০০ কোটি টাকার সামগ্রী পড়ুয়ারা কম পেয়েছে।”

অন্যদিকে, কালীদাসী মিত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় চৌধুরী বলেন, “করোনার জন্য  প্রতিমাসে ২ সপ্তাহ অন্তর ধরে আমরা চাল দিই। যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেই নিয়ম মেনে মাসে ২ কেজি চাল, ডাল, আলু দেওয়া হয়। আমার স্কুলে ৬০ জন বাচ্চা। প্রত্যেককে ধরে ধরে ডেকে এনে ওজন মেশিনে করেই চাল দেওয়া হয়। যদি কোনও পড়ুয়ার অভিভাবক মিড-ডে মিলের চাল না পান তাহলে তা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।”

যদি সরকারি নির্দেশ মেনেই ২ কেজি করে চাল দেওয়া হয়ে থাকে পড়ুয়াদের, তাহলে বাড়তি চাল কোথায় যাচ্ছে? এ প্রসঙ্গে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এ বিষয়টা নিয়ে আমি এখনই মন্তব্য করতে পারব না। গোটা বিষয়টা বুঝে জেনে তারপর খতিয়ে দেখা হবে।” তবে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। মাসে মাথাপিছু ২ কেজি চাল দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা। তবে তৃণমূল  শিক্ষক সংগঠনেক দাবি, কেন্দ্র যা বলে তা খাতায় কলমে দেখা যায় না। তার কোনও প্রতিফলন নেই। কেন্দ্রের থেকেই চাল কম আসছে বলে অভিযোগ তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের।

ঘটনায়, অশোকনগর বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক চপলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ” চালের পরিমাণ আরও বাড়ানো উচিত। ২ কেজি চালে কোনও বাচ্চারই পুষ্টি যথাযথ হয় না। এই বিষয়ে খতিয়ে দেখা উচিত।” অন্যদিকে, মিড ডে মিলের চাল দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, “এই চালচুরির ঘটনা নতুন কিছু নয়। একটা লুঠের সরকার চলছে রাজ্যে। সেখানে চাল চুরি আর নতুন কী ঘটনা!”

তবে সম্প্রতি মিড-ডে মিল খাতে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াতেও বদল এনেছে কেন্দ্র। শিক্ষা দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, এ বার মিড-ডে-মিলের জন্য একটি জ়িরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। তাতে কেন্দ্র ৬০% এবং রাজ্যের তরফে ৪০% টাকা দেওয়া হবে। বছরের শেষে যদি দেখা যায়, কেন্দ্রর টাকা অবশিষ্ট আছে, তা হলে পরেরবার  সেই মোট বরাদ্দ থেকে অবশিষ্ট টাকা বাদ দিয়ে বাকি অর্থ পাঠানো হবে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে চাল বাবদ গোটা বরাদ্দই ১০০% কেন্দ্রের। রান্নার অন্যান্য সামগ্রী খাতে  কেন্দ্রের বরাদ্দ ৬০%, রাজ্যের ৪০%। রাঁধুনি ও তাঁর সহযোগীদের খরচ বাবদ কেন্দ্র ৬০০ টাকা দিলে রাজ্যকে দিতে হবে ৯০০ টাকা। রান্নার বাসনপত্রে একই অনুপাত বজায় থাকবে। আনুষাঙ্গিক অন্যান্য খরচও এই অনুপাতেই কম বেশি বন্টন করা হবে বলেই খবর।

আরও পড়ুন: Visva Bharati University: আভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের দাবিতে গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের, বন্ধ ভর্তি প্রক্রিয়া

Next Article