Visva Bharati University: আভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের দাবিতে গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের, বন্ধ ভর্তি প্রক্রিয়া

Birbhum: অন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে বিশ্বভারতীতে আবেদন করছেন সেই সব পড়ুয়ারা। তাঁদের সঙ্গে একইভাবে পাল্লা দিয়ে ভর্তির আবেদন করছেন বিশ্বভারতীরও কৃষি বিভাগের পড়ুয়ারা।

Visva Bharati University: আভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের দাবিতে গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের, বন্ধ ভর্তি প্রক্রিয়া
বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 12, 2021 | 1:34 PM

বীরভূম: ফের ছাত্রবিক্ষোভে উত্তাল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে গেল ভর্তি প্রক্রিয়া। শুক্রবার সকাল থেকেই সেন্ট্রাল অফিস, গ্রন্থাগারের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, বিশ্বভারতীর কৃষিবিজ্ঞান বিভাগে আভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ চালু করতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে অফলাইন ক্লাস চালু ও আদালতের নির্দেশ মেনে বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়াকে ফেরানোর দাবিতে এদিন বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা।

সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যে মোট তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে কৃষিবিজ্ঞান পড়ানো হয়। তার মধ্যে বিশ্বভারতী একটি। বাকি দুটি পুরোপুরি ভাবেই রাজ্য সরকারের অধীন। একটি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যটি উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।  একমাত্র বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু, অন্য সব বিভাগে আসন সংরক্ষিত থাকলেও বিশ্বভারতীতে কৃষিবিজ্ঞান বিভাগে আলাদা করে আসন সংরক্ষিত নেই। ফলে সমস্যায় পড়ুয়ারা।

ঠিক কোথায় সমস্যা?

বিশ্বভারতীতে কৃষিবিভাগে আন্তঃপড়ুয়াদের জন্য কোনও বিশেষ সংরক্ষণ নেই। অন্য বিভাগে প্রায় ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ থাকলেও কৃষি বিভাগে নেই। ফলে, বিশ্বভারতীতে স্নাতকোত্তর স্তরে আবেদন করতে গেলে নম্বরের শতাংশেই বেশি নজর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে, আন্তঃপড়ুয়ারা বাইরের পড়ুয়াদের চেয়ে কোনও বিশেষ বেশি সুবিধা পান না।

এদিকে, অন্য দুটি স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রে ছবিটা অন্যরকম। সেখানে কৃষিবিভাগে সংরক্ষণ রয়েছে। তার অনুপাতটিও নজরকাড়া। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অনুপাত ৮০:২০। অর্থাত্‍, ৮০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, বাকি ২০ শতাংশ বাইরের। অন্যদিকে, বিধানচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়েও সংরক্ষণের হার প্রায় একই। উপরন্তু, আভ্যন্তরীণ পড়ুয়াদের জন্য নম্বরের শতাংশেও বিশেষ ছাড় রয়েছে। সেদিক থেকে  বিশ্বভারতীর তা নেই।

সমস্যা সেখানেই। কারণ, অন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে বিশ্বভারতীতে আবেদন করছেন সেই সব পড়ুয়ারা। তাঁদের সঙ্গে একইভাবে পাল্লা দিয়ে ভর্তির আবেদন করছেন বিশ্বভারতীরও কৃষি বিভাগের পড়ুয়ারা। অন্যদিকে, বিশ্বভারতীতে ভর্তি হতে না পারলে যখন এখানকার পড়ুয়ারা অন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করছেন তখন আভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের কারণে তাঁরা ভর্তি হতে পারছেন না। ফলে, কার্যত বিশ্বভারতীয় কৃষিবিভাগের পড়ুয়াদের অবস্থা হয়েছে ‘শাঁখের করাত’-এর মতো! তাঁরা না অন্যত্র আবেদন করে সুযোগ পাচ্ছেন না বিশ্বভারতীতে!

এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। বিশ্বভারতীর আন্দোলনরত পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটতে পারেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, গত অগস্টের ২৭ তারিখ থেকে বিশ্বভারতীর তিন ছাত্রকে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে আচার্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। সেই সময়ই তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে শান্তিনিকেতন প্রিয় বহু মানুষ। সেই সময় গড়ে ওঠে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন বাঁচাও যৌথ মঞ্চ। উপাচার্যকে সরানোর দাবি তুলতে থাকে তারা। সেই দাবিতে অনড় থাকেন বিক্ষোভকারীরা।

যৌথ মঞ্চের তরফে একাধিক অভিযোগ তুলে চিঠি দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই চিঠিতে তাঁরা, উপাচার্যের নানান দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, উপাচার্য একের পর এক অনৈতিক কাজ করে চলেছেন। তাই তাঁরা অপসারণের দাবি তুলছেন।

পরে যৌথ মঞ্চের তরফে একটি বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী দিনে কোন পথে এগোবে আন্দোলন। স্পষ্ট বার্তা, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন চলবে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বিশ্বভারতীকে আদালতের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও বহিস্কৃত ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি।

সেই সময় যৌথ মঞ্চের তরফে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন,বিশ্বভারতীর মেলা মাঠ বাঁচাও কমিটি সহ, আশ্রমিক অধ্যাপক সকলের বিরুদ্ধে উপাচার্য যে একের পর এক অনৈতিক কাজ করে চলেছেন তার প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন: Adhir Chaudhuri: ‘তৃণমূলে মূষলপর্ব শুরু হয়েছে….এত পদ, এত টাকা, এত ক্ষমতা!’