কলকাতা: রাজ্যের একাধিক জেলা কমিটিতে রদবদল নিয়ে প্রশ্নের মুখে গেরুয়া শিবির। বঙ্গ বিজেপিতে বাড়ছে বিদ্রোহ, ভাঙন। তারইমধ্যে দুদিনের সফরে রাজ্যে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। দশ বছর পর আরএসএস-এর বৈঠক হচ্ছে কলকাতায়। থাকছেন দত্তাত্রেয় হোসবোলে সহ আরও ছয় শীর্ষ নেতা। সাংগঠনিক বিষয়ে সঙ্ঘপ্রধান সহ শীর্ষ আরএসএস নেতাদের বার্তায় নজর পদ্ম নেতাদের।
বিজেপিতে ক্রমেই বিদ্রোহের সুর জোরাল হয়েছে। শুরুটা হয়েছিল সায়ন্তন বসুর হাত ধরে। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েন সায়ন্তন বসু। সঙ্গে সঙ্গেই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি। সেই শুরু…গত কয়েকদিনে সেই রীতিই ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপিতে। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং ইনচার্জদের নাম ঘোষণা পরে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার কয়েকজন বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। দলের রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন বাঁকুড়ার ৫ বিধায়কও।
এদিকে, মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটের ওপর নির্ভর করে লোকসভা নির্বাচনে যে ফল দেখেছিল পদ্ম শিবির। কিন্তু নতুন রাজ্য ও জেলা কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের জায়গা না দেওয়ায় ভীষণভাবে বিরক্ত শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের ক্ষোভের কথা জানাতেও প্রস্তুত। তবে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
এরই মধ্যে সুর চড়িয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারিরা। দলের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য় করে বরখাস্ত হয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারিরা। বরখাস্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গ বিজেপির সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য বিজেপিতে সংগঠন বলে কিছু নেই। দুই অনভিজ্ঞ নেতা রীতিমতো মৌরসি পাট্টা গড়ে তুলেছেন। দফতরকে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করেছেন। বিজেপির নতুন সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিজেপির ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ রীতিমতো ফাটলের গা বেয়ে বেরিয়ে আসে। বিদ্রোহী জয়প্রকাশের সুর অবশ্য এখন অনেকটাই খাদে। সুকান্ত মজুমদারকে শক্ত হাতে রাশ ধরার পরামর্শ জয়প্রকাশ মজুমদারের। তাহলেই প্রাণ ফিরে পাবে বঙ্গ বিজেপি। জয়প্রকাশ বলেন, “রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব একদিকে নির্বাচন পিছনোর কথা বলছেন, অন্যদিকে, জেলা কমিটির গঠনটাও পিছিয়ে দিতে চাইছেন। এই দুটো তো একসঙ্গে হতে পারে না। আমি বলব রাজ্যের সভাপতিকে আমি শক্ত হাতে এই সংগঠনটাকে ধরুন। দেখুন কীভাবে আপনি আবার সংগঠনটাকে আগের মতো শক্ত তৈরি করতে পারেন বা তাতে প্রাণ দিতে পারেন। রাজ্য বিজেপি প্রাণ চলে গিয়েছে, তাতে ফের প্রাণ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন।”
জয়প্রকাশের মন্তব্যে এবার কি বিদ্রোহের ইতি ইঙ্গিত, নাকি এবার শীর্ষ নেতৃত্বই বাতলে দেবেন সমাধানের উপায়? তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মোহন ভগবতের এদিনের শহরে আসার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Presidency University: শীত উপেক্ষা করেই রাতভর রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ! আজও উত্তাল হতে পারে প্রেসিডেন্সি