কলকাতা : পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (Public Accounts Committee) চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়ের (Mukul Roy) থাকা ঘিরে মামলার প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলল শুনানি। আগামী ১৯ জানুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে। মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত মামলায় এত দীর্ঘ শুনানি এ দিনই হয়। সমস্ত বিষয় আজ বিধানসভা (West Bengal Assembly) কর্তৃপক্ষ রেকর্ড করে। তবে মুকুল রায়ের আইনজীবীরা একই যুক্তি দিয়েছেন। আইনজীবীদের বক্তব্য, মুকুল অন্য রাজনৈতিক দলের মঞ্চে সৌজন্যের খাতিরে গিয়েছিলেন। তিনি কোনও রাজনৈতিক দল যোগ দেননি। মুকুল বিজেপিতেই আছেন। বিজেপিও মুকুল রায়কে সাসপেন্ড করেননি।
এদিকে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে মুকুল রায় ও পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্য়ান মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে বিধানসভার শুনানিগুলিতে কী কী হয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের জানাবে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, এর আগে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিধানসভার অধ্যক্ষকে বলা হয়েছিল, “আমরা আশা করব, এই বিষয়ে আপনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।” অর্থাৎ, সরাসরি নির্দেশ না হলেও সুপ্রিম কোর্টের এই বক্তব্য নির্দেশের সামিল বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের অনেকেই।
এদিকে শুক্রবার বঙ্গ বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকে দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ” পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির মামলার শুনানি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে । এই রাজ্যের পরিষদীয় ব্যবস্থাকে হাস্যকর করে তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদীয় গণতন্ত্রের পরম্পরা ভেঙে তৃণমূল চলছে। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য সর্বতোভাবে ব্যবস্থা করবে বিজেপি।” উল্লেখ্য, ১১ জানুয়ারি থেকে তৃণমূলের সঙ্গে সেকেন্ড ইনিংস শুরু করেন মুকুল রায়। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ, মুকুলের আইনজীবীদের বক্তব্য, বিধায়ক নাকি বিজেপিতেই রয়েছেন। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে তিনি যোগ দেননি।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার মুকুল রায়ের গলাতেও শোনা গিয়েছে এমন পরস্পরবিরোধী মন্তব্য। প্রাথমিকভাবে সেগুলিকে মুকুল বাবুর শারীরিক অসুস্থতার কারণেই ভুল করে বলা কথা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনকী মুকুল পুত্র শুভ্রাংশুও সেই কথাই জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও মুকুল রায়ের আইনজীবীদের এ হেন মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। উল্লেখ্য, এর আগে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নিতে হবে বিধানসভার অধ্যক্ষকেই। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে দ্রুত যাতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, সে কথাই বলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তরফে।
আরও পড়ুন : West Bengal BJP : ব্যর্থতা ঢাকতেই কল্যাণ-অভিষেক বিতর্ক? তৃণমূলের ‘নাটকে’র তত্ত্ব উস্কে দিল বিজেপি