কলকাতা: আগামী বছরের ফ্রেবুয়ারি মাসের শেষভাগে অথবা মার্চের গোড়ার দিকেই কলকাতা পুর ভোট হতে পারে বলে জল্পনা শোনা গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে। পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এব্যাপারে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)-কে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন।
পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, কলকাতায় কোন কোন ওয়ার্ডে কী কী কাজ বাকি রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ এসেছে। পুরসভার অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও ইতিমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ভোট প্রস্তুতিতে রাজ্য প্রশাসন কিছুটা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “দলের সঙ্গে এখনও এব্যাপারে কোনও বৈঠক হয়নি। তবে ভোট তাড়াতাড়ি হোক, আমরা নিশ্চয়ই চাই। সেইমতো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নেওয়া হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: কোভিড পরিকাঠামোয় কাটছাঁট, বেসরকারি হাসপাতালকে শয্যা ফেরানোর নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতরের
চলতি বছরেই কলকাতার বাসিন্দা শরদকুমার সিং পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অগস্টে হাইকোর্ট তাঁর মামলা খারিজ করে দেয়। তবে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেই যত দ্রুত সম্ভব পুরভোট করাতে হবে বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান শরদকুমার। পুরসভাগুলিতে রাজনীতিকদের বদলে কেন নিরপেক্ষ প্রশাসক নিয়োগ করা হল না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরাও।
গত ৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় কলকাতা সহ অন্যান্য পুরসভাগুলিতে কবে ভোট করা সম্ভব, তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে তাড়াতাড়ি ভোট করা সম্ভব না হলে পুরসভার মাথায় স্বাধীন প্রশাসক বসাতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission) জানিয়েছে, জানুয়ারির মাসের মধ্যেই রাজ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ভোট কবে করানো সম্ভব হবে, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চায় বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউলের বেঞ্চ। ১৭ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেই হিসেবে রাজ্যের হাতে আরও কিছুদিন সময় রয়েছে। কলকাতা পুরসভার আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতিরা জানিয়েছেন কোভিড পরিস্থিতির জন্য ভোট করানো সম্ভব না হলে স্বাধীন নিরপেক্ষ প্রশাসক নিয়োগ করতে হবে।” আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ সিনহা বলেন, “দশ দিনের মধ্যে পুরভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে স্বাধীন প্রশাসক বসাতে হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে।”
আরও পড়ুন: “আমার পরিবারের কেউ অন্যায় করলেও শাস্তি পাবে”, দুর্নীতি প্রসঙ্গে মমতার জবাব