NEP: গ্র্যাজুয়েশনের পর সোজা পিইএচডি? মসৃণ পথের কাঁটা একটাই…
NEP: এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মিটিংয়ের নির্যাস উচ্চ-শিক্ষাদফতরকে জানানো হবে।
কলকাতা: আগামী শিক্ষাবর্ষে কলেজের ডিগ্রি কোর্স তিন বছরের হবে নাকি চার বছরের, সংশয় ক্রমশ বাড়ছে। তাহলে কি উঠে যাবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি (MA)। স্নাতক উত্তীর্ণ পর সোজা পিএইচডি (PHD) পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা? এই সকল প্রশ্নই জোরালো হচ্ছে। অধ্যক্ষদের একাংশ মনে করছেন উচ্চ-শিক্ষায় তড়িঘড়ি এই আমূল পরিবর্তন আনা অনুচত হবে। কারোর মতে এখনই এই পরিবর্তন না আনলে দেরি হয়ে যাবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রায় ১৫০ বেশি কলেজ রয়েছে। তাই সঠিকভাবে পরিবর্তন শুরু না হলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে আমূল পরিবর্তনে যে উন্নত পরিকাঠামো প্রয়োজন সকলেই একমত। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মিটিংয়ের নির্যাস উচ্চ-শিক্ষাদফতরকে জানানো হবে।
অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাস্তবায়িত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় যে জাতীয় শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা ইউজিসির গাইডলাইন মোতাবেক মানতে হবে। না-হলে বাংলার পড়ুয়ারা সর্বভারতীয় স্তরে অন্যন্য রাজ্যগুলির পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবেন না। সেই জায়গা থেকেই এই চার বছরের কোর্সের কথা ভাবা হয়। এই চার বছরে স্নাতক স্তরে সার্টিফিকেট কোর্স করা যাবে, ডিপ্লোমা করা যাবে। চার বছর অতিক্রান্ত হলে ‘ইন্টিগ্রেটেড গ্রাজুয়েশন’ হবে। সরাসরি পিএইডি-র রাস্তা খুলে যাবে।
কিন্তু বাধ সাধছে পরিকাঠামো। নতুন এই শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করছেন অধ্যক্ষদের একাংশ। তাঁরা বারবার বলছেন যে, এই শিক্ষানীতিতে পড়াশোনার মান বদলে যাচ্ছে যেমন ঠিক তেমনই চার বছরের কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ভবন প্রয়োজন, শিক্ষক প্রয়োজন। সেই জায়গাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কোনও-কোনও কলেজের ক্ষেত্রে।
লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষ শিউলি সরকার বলেন, “এটা এক মুহূর্তে করা সম্ভব নয়।” যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় বলেন,”আমাদের তো অ্যাকাডেমিক ইয়ার ৩ বছরের হতই। অতিরিক্ত আরও অনেকগুলি বছর আমরা পাচ্ছি চতুর্থ বছরের প্রস্তুতির জন্য।”
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালেয় হাজির হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়নের জন্য একটি বৈঠকে বসেছিলেন। সূত্রের খবর, জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধ্যক্ষরা যাতে অগ্রণী ভূমিকা নেন, সেই পরামর্শও দেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। রাজ্য সরকার যাতে এই বছর থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করতে পারে, তার জন্য আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।