কলকাতা: হাইকোর্টে জমা পড়া মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দিল নবান্ন। সূত্রের খবর, কমিশনের পক্ষ থেকে তোলা প্রতিটি অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেকটি অভিযোগের জবাবও দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে নবান্নের পক্ষ থেকে। সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। তবে যেহেতু কমিশনের ওই রিপোর্ট প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাতার, তা সবিস্তারে দেখতে কিছুটা সময় লাগছে বলেই খবর নবান্ন সূত্রে।
ভোট পরবর্তী হিংসার যে যে অভিযোগ রাজ্যে উঠেছিল, সেগুলির ভিত্তি এবং সারবত্তা খতিয়ে দেখতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টই বৃহস্পতিবার আদালতে জমা পড়ে। তারপরই থরহরিকম্প শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। কেননা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সেই রিপোর্টে উল্লেখ করে, “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।” এমনকী, রাজ্যের একাধিক প্রথম সারির তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উদয়ন গুহ, পার্থ ভৌমিক প্রমুখ) ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।
সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই রাজ্য সরকারও তৎপরতা শুরু করেছে। শুক্রবার নবান্নে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাতার রিপোর্টে থাকা প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আগামী ২২ জুলাই এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আদালতে জবাব দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। যেহেতু হাতে সময় কম এবং অভিযোগের তালিকা সুবিশাল, তাই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের জবাব দিতে কিছুটা অতিরিক্ত সময়ও চাওয়া হতে পারে আদালতের কাছে, এমনটাই খবর নবান্ন সূত্রে।
নবান্ন সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, শুক্রবারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে শীর্ষ আধিকারিকরা। রাজ্য সরকারের শীর্ষ আইপিএস অফিসারদেরও ডেকে পাঠানো হয়েছিল সেই বৈঠকে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মানবাধিকার কমিশনের তোলা প্রতিটি অভিযোগের জবাব দেওয়া হবে। কোন পথে ঠিক কী ভাবে এই জবাব দেওয়া হবে, তার রূপরেখাও আজকের এই বৈঠকেই তৈরি হয়েছে বলে খবর সূত্রের। আরও পড়ুন: এই একটি ‘লাইন’ তৃণমূল সরকারের পতন ঘটাবে, দাবি শুভেন্দু অধিকারীর