কলকাতা: রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলির হাত ধরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সূত্রপাত হবে না তো? আপতত এই আশঙ্কাই দুশ্চিন্তায় রেখেছে নবান্ন এবং স্বাস্থ্য ভবনকে। সেরকমটা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সতর্ক করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। শুক্রবার ভিডিয়ো কনফারেন্সে হওয়া এক বৈঠকে জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে অবস্থিত হোটেলে পুলিশি নজরদারি চালাতে হবে। পাশাপাশি কোভিড বিধি লঙ্ঘন হলে প্রয়োজনে জরিমানা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষত, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় পর্যটকদের কাছে টিকাকরণের শংসাপত্র রয়েছে কি না, তাঁরা কোভিড বিধি মানছেন কি না, তার উপরে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। শুক্রবার প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজ্যের সবক’টি জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সেই সূত্রেই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানে নমুনা পরীক্ষার নিরিখে সংক্রমণের হার কেন বেশি তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে নদিয়ায় এখনও কেন প্রায় প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও না কারও মৃত্যু হচ্ছে, সেই বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, কোচবিহারের জেলা প্রশাসনের তরফে কেস বাড়ার কারণ হিসাবে বলা হয়, অসমে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ওই জেলার অসম লাগোয়া অংশে তার প্রভাব পড়ছে। নদিয়ায় কোভিড হাসপাতালগুলিতে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি মেডিক্যাল অফিসারদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া জরুরি বলে স্বাস্থ্য ভবনকে জানানো হয়েছে। টিকাকরণের প্রশ্নে দ্বিতীয় ডোজ় যে এখনও রাজ্য প্রশাসনের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে, তা জেলাশসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। প্রথম ডোজ় দেওয়ার প্রশ্নে অগ্রাধিকারে রয়েছে শহরাঞ্চলের বস্তি এলাকার বাসিন্দারা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার বস্তি অঞ্চলে টিকাকরণের হার আশানুরূপ নয়। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পুর এলাকাতেও টিকাকরণের হার কম। আত্মনিয়ন্ত্রণের বাঁধ এখন অনেকখানি শিথিল। এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে। এই অবস্থায় সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে আরটি-পিসিআর এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট; এই দু’ধরনের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন বৃদ্ধির জন্যও জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। আরও পড়ুন: রাজ্যে আইনের শাসন নেই? কমিশনের তোলা প্রতিটি অভিযোগের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু নবান্নে