কলকাতা: এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের তিন তলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২ দিনের জন্য ইডির হেফাজতে রয়েছেন। কার্ডিওলজি বিভাগের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আইসিসিইউ-র ১৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন পার্থ। সেখান থেকে তাঁকে তিনতলায় এসি ওয়ান কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয় রাতে। কিন্তু রাতারাতি বদলে গিয়েছে হাসপাতালের ছবিটা। কার্ডিওলজি বিভাগের গেট, যেটি রোজই খোলা থাকত, সেটি কাল থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হেভিওয়েট মন্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই পরিজনকে দেখতে পারছেন না অন্যান্য রোগীরা। কারণ রোগীর আত্মীয়দের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। হাসপাতাল জুড়ে জারি একাধিক নির্দেশিকা, রয়েছে কড়া নজরদারি। কার্ডিওলজি বিভাগে ঢোকার কলাপসিবল গেটটা বন্ধ রয়েছে। তাতে তালা লাগানো। ভিতরে প্রহরারত দুই কর্মী। গেট অন্যান্য দিন খোলা থাকে। রোগীর পরিজনেরা যাতায়াত করেন। শনিবার থেকে সেই গেটের বাইরে অপেক্ষরত রোগীর পরিজনেরা। রাত থেকে সেখানেই বসে রয়েছেন তাঁরা। সকালেও তাঁরা আপনজনকে দেখতে পাননি চোখের দেখা।
এক জনের স্বামী ভর্তি রয়েছেন তিন দিন। প্রথম দিন দেখতে পেয়েছিলেন। শনিবার থেকে আর স্বামীকে দেখতে পারছেন না ষাটোর্ধ্ব মহিলা। তাঁর মেয়ে এসেছে বর্ধমান থেকে। তিনিও তাঁর বাবাকে দেখতে পাননি এখনও। বললেন, “আমাদের তো যেতে দিতে যাচ্ছে না। বলছে ওরা এখন যাওয়া যাবে না। ডাক্তারবাবু বললে তবেই যেতে পারব। জানি না কখন দেখতে পাব।”
এরকই অপেক্ষারত বহু মানুষ। তাঁদের এক জন বললেন, “এত কড়াকড়ি তো ছিল না। আমরা তো দেখতেই পেতাম। কাল থেকেই সব বদলে গিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধ করা হচ্ছে।” রাতভর কার্ডিওলজি বিভাগের বাইরে মাটিতে বসে রয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা।
আদালতের নির্দেশে সোমবারই আদালতে পার্থর রিপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা এসএসকেএম-এর মেডিক্যাল বোর্ডের। মন্ত্রীর চিকিত্সায় ৬ সদস্যের বোর্ড গঠন করেছে এসএসকেএম। সূত্রের খবর, আরও কিছুদিন হাসপাতালেই পার্থর চিকিৎসা প্রয়োজন রয়েছে বলে রিপোর্ট দিতে চলেছেন তাঁরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হার্টে ব্লকেজ রয়েছে। মূলত সেটিরই চিকিৎসা চলছে। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকায় ক্রিয়েটিনিন, ইউরিন পরীক্ষা হবে। কিডনির অসুখে পার্থর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্র অনেকটা কমে যায়। হিমোগ্লোবিনের পাশাপাশি রক্তের অন্য পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাঁকে নজরে রেখেছেন।