কলকাতা: শনিবার ভরদুপুরে শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটেছে খাস কলকাতায়। এক বেসরকারি হাসপাতালের আট তলার কার্নিশ থেকে সটান নীচে এসে পড়ে এক রোগী। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠেছে মল্লিকবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও। কারণ, কার্নিশ থেকে পড়ে যাওয়ার আগে ওই রোগী প্রায় দু’ঘণ্টা সেখানে বসেছিলেন। কখনও তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, কখনও আবার পা দুলিয়ে, হাত নাড়িয়ে নানা অঙ্গভঙ্গি করেছেন। এতটা সময় পাওয়ার পরও কেন ওই রোগীকে উদ্ধার সম্ভব হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরইমধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন চিকিৎসক অভীক রায়চৌধুরী, সিইও চিকিৎসক জয়িতা বসু ও অতিরিক্ত সিইও অর্পিতা মণ্ডল (চিফ অব নার্সিং)। তাঁদের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেনি। ২ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার ওই রোগী ঝাঁপ মারার হুমকি দিচ্ছিলেন।
এদিন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই যুবকের বয়স ৩৩ বছর। গত ২৩ জুন মল্লিকবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। দু’দিন চিকিৎসার পর শনিবারই তাঁকে সেখান থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। এরইমধ্যে সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখে, জানলা খুলে বেরোনোর চেষ্টা করছেন ওই যুবক। প্রথমে নার্সরা ধরেও ফেলেছিলেন। কিন্তু কামড়ে দেন ওই রোগী। এরপরই জানলা থেকে বেরিয়ে সটান কার্নিশে নেমে যান। সঙ্গে সঙ্গে থানা ও দমকলে খবর দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেডের পাশেই ওই জানলা ছিল। তার একটি বোল্ট কাটা হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। কার্নিশে বিছানা অপারেট করার চাবিও পাওয়া গিয়েছে।
এই ঘটনার পর অভিযোগ ওঠে, হাসপাতাল বিরাট অঙ্কের বিল মকুবের দাবিতে এই কাণ্ড করেছেন দক্ষিণদাঁড়ির ওই যুবক। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা মানতে চাননি। তাদের সাফ দাবি, টাকা পয়সার কোনও ব্যাপারই নেই। এদিন আটতলা থেকে পড়ে মাথা, বুকে আঘাত পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। আপাতত ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। পায়ের হাড় ভেঙেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে অন্তর্তদন্ত শুরু হয়েছে।