কলকাতা : ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে গিয়েছে কলকাতায়। মল্লিক বাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালের আট তলার কার্নিশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ছিলেন এক রোগী। নীচে পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দল… সবাই ছিল। কিন্তু তারপরও উদ্ধার করা গেল না তাঁকে। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের আট তলার কার্নিশ থেকে ধাক্কা খেতে খেতে নীচে পড়েন তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মল্লিক বাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালের আটতলায় সাধারণ ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আজ ছুটি হওয়ার কথা ছিল। বাড়ির লোকও সময় মতো পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু তারই মধ্যে এমন অঘটন ঘটে গেল।
জানা যাচ্ছে, জীবন যুদ্ধে এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিছুদিন আগেই স্ত্রীকে হারিয়েছেন। এখনও এক মাসও হয়নি। মাত্র ২২ দিন আগেই স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে কার্নিশ থেকে নীচে পড়া রোগীর। সেও এক করুণ কাহিনী। ব্লাড ক্যান্সারে প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, তারপর থেকেই গুম মেরে গিয়েছিলেন তিনি। ক্রমশ চুপচাপ হয়ে যান। আর মাঝেমধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে যেতেন। তাঁর খিচুনি রোগও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই রোগীর বাড়ি দক্ষিণদারি এলাকায়। দুর্ঘটনার পর দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সাহায্যও করা হয়েছিল। মানসিকভাবে কিছু সমস্যা চলছিল তাঁর, সেই কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী। তবে নিউরো সায়েন্সের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মানসিক সমস্যা কথা জানা ছিল না।
দক্ষিণদারির ওই যুবকের বাড়িতে দুই ছোট ছেলে রয়েছে। একজনের বয়স নয় বছর, আর একজনের মাত্র দুই বছর বয়স। রোগীর মাসতুতো ভাই জানিয়েছেন, গত বুধবার তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। যা বিল হয়েছিল, তার পুরোটাই মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে। তাঁর মেডিক্লেমও ছিল। ওই রোগী আগে লরি চালাতেন। পরে তিনি অন্যান্য গাড়ি চালাতেন। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ভর্তি হওয়ার পর দু’দিন খুব চঞ্চল ছিলেন। তারপর চুপ হয়ে গিয়েছিলেন।