কলকাতা: পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনেই রাজভবনের সামনে ধরনায় বসেছেন উপাচার্যদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার দাবি ও উপাচার্য নিয়ে স্থায়ী সমাধান চেয়ে রাজভবনের নর্থগেটের উল্টোদিকে ধরনায় সরকারপন্থী উপাচার্যরা। শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে ধরনার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। এই আবহেই এবার রাজভবনের সামনে ধরনায় বসলেন উপাচার্যরা। রয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষাবিদরাও। তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষাব্যবস্থায় অস্থিরতা তৈরি করছেন রাজ্যপাল।
এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত হন ওমপ্রকাশ মিশ্র, সুবোধ সরকার, শিবাজীপ্রতিম বসু, উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম পাল, অভীক মজুমদাররা। এদিনের কর্মসূচি নিয়ে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি আচার্য তাঁকে খোলা চিঠি দেবো। বাংলার কৃতী শিক্ষাবিদরা আজ এখানে এসেছেন। আমরা কোনও মাইকের ব্যবহার করছি না, কোনও ধরনা নয়। আমাদের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, চিঠি এখানে তুলে ধরতে এসেছি।”
এদিন জমায়েত করা শিক্ষাবিদদের বক্তব্য, আচার্য কোনও কথার গুরুত্ব দেননি। তাই বাধ্য হয়ে পথে নামতে হল। না হলে পথে নামার দরকার হতো না। অন্যদিকে রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাতে জাঁতাকলে পড়ে গিয়েছেন রেজিস্ট্রাররাও। শুক্রবারই শিক্ষামন্ত্রী একটি বৈঠক ডেকেছেন। দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। এদিকে এই বৈঠকে সম্মতি নেই রাজ্যপালের। ফলে ব্রাত্যর বৈঠকে গেলে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে অমান্য করা হবে। ফলে সাঁড়াশি চাপে রেজিস্ট্রাররা।
সুবোধ সরকারের কথায়, “আমি তো উপাচার্য নই, উপাচার্যও হব না। তবু রাস্তায় নামতে বাধ্য হলাম। কারণ, আমি একজন অধ্যাপক হিসাবে মনে করি রাজ্যপাল যা করছেন তাতে ওনাদেরই যে দফতর ইউজিসির নিয়ম মানছেন না। নিশুতিরাতে উনি একে ওকে উপাচার্য করে দিচ্ছেন। কাউকে করার পর আবার তাড়িয়েও দিচ্ছেন। এটা বিচিত্র। স্বাধীনতার পর এরকম ঘটনা আমরা দেখিনি। এরকম উদ্ভট কাণ্ড কোনও রাজ্যপাল করতে পারেন, ভাবতে পারি না। প্রথম কোনও রাজ্যপালকে দেখলাম। বিশেষ করে ওনার কাছ থেকে আশা করিই। কারণ, উনি এক উচ্চশিক্ষিত মানুষ। তিনি একজন লেখক। তাঁর এ কী কাণ্ড!”
এই অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “সব ধরনের শিক্ষায় বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। এটা না কাটানো গেলে বাংলা মুখ থুবড়ে পড়বে।” অন্যদিকে যাদবপুরের অধ্যাপক তথা জুটার নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমরা বারবারই বলছি রাজভবন ও বিকাশভবন নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসুক। না হলে শিক্ষা পিছনের সারিতে চলে যাচ্ছে। এই সংঘাতের আবহ থাকা উচিত না।”