কলকাতা: ফের খুলে গেল কলকাতার ফুসফুস রবীন্দ্র সরোবর লেক। প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে লেক। সোমবার সকালেই লেকে প্রাতঃভ্রমণে এসেছিলেন বহু মানুষ। করোনা আবহে রবীন্দ্র সরোবর লেক দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল।
কংক্রিটের শহরে রবীন্দ্র সরোবর যেন এক টুকরো ওয়েসিস। অনেকেই বলেন, কলকাতার ফুসফুস রবীন্দ্র সরোবর। কিন্তু করোনার সঙ্কট ও পরবর্তীকালে ইয়াসের মতো বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়-দুইয়ের জেরে দীর্ঘদিন মানুষের সংস্পর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল রবীন্দ্র সরোবর।
এর আগেও লকডাউন পরিস্থিতিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল লেক। সেবারও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সরোবর। আনলক ২-এর প্রথম দিন খুলে দেওয়া হয় লেক। পরবর্তীকালে ফের করোনার বাড়বাড়ন্ত, ওমিক্রনের চোখরাঙানিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর লেক।
একদম প্রথমেই বছর দুয়েক আগে লকডাউনের শুরুতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর লেক। তার মাঝে হয়ে যায় ইয়াস, আমফানের তাণ্ডব। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় রবীন্দ্র সরোবর লেকের বিস্তীর্ণ এলাকা। ভিতরে উপড়ে পড়ে বহু গাছ। সেই সব গাছ সরিয়ে এলাকা পরিষ্কার করতেও বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়।
মাঝের এই সময়টার মধ্যে অনেকটাই হারিয়ে যায় উদ্যানের চেনা ছবিটা। অনেকেই রবীন্দ্র সরোবর লেকে হাঁটতে আসা বন্ধ করে দেন। মাঝে যখন পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হয়েছিল, রবীন্দ্র সরোবর লেক প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেবার প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য ভোর ৫.৩০ মিনিট থেকে ৮ টা পর্যন্ত লেক খুলে দেওয়া হয়।
এবার অবশ্য সময়ের কিছুটা হেরফের হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে লেক। প্রাতঃভ্রমণে আসতে পেরে খুশি প্রাতঃভ্রমণকারীরা। সোমবার সকালে কিছুটা হলেও রবীন্দ্র সরোবর লেকে সেই চেনা ছবিটা ধরা পড়েছে। তবে বৃষ্টিস্নাত শহরে এদিনে প্রাতঃভ্রমণকারীর সংখ্যা ছিল কিছুটা হলেও কম।
এক প্রাতঃভ্রমণকারী বলেন, “সকালের এই হাঁটা আমাদের সারাদিনের কাজের শক্তি জোগায়। মনটা ভালো লাগে। হাঁটতে এসে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। মাঝে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার খুলেছে ভালো লাগছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক কবে হবে, তা তো সেভাবে বলা যায় না। তবে লেক খোলায় আমরা সত্যিই প্রাণ ফিরে পেলাম।”
আরেক জনের কথায়, “এত ভালো লাগছে কী বলব। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ে দেখলাম লেক খোলা। সকলে হাঁটছেন। এ দৃশ্য অনেক দিন দেখা যায়নি।” বিভিন্ন গেটের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ কর্মী। ভিতরে চলছে সতর্কতামূলক প্রচার। প্রত্যেকে যাতে মাস্ক পরে হাঁটেন, আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সে ব্যাপারে সতর্কতা মূলক প্রচার করা হচ্ছে। রবীন্দ্র সরোবর খুলে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ছন্দে শহর কলকাতা।