হেস্টিংসের অফিস থেকে প্রথমে সরল রাজীবের নেমপ্লেট! পরক্ষণে আবারও বসানো হল দরজায়

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Sep 13, 2021 | 6:10 PM

Rajib Banerjee: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর রাজীব ফেসবুক পোস্টে বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তৃণমূলের সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন। সেই প্রথম!

হেস্টিংসের অফিস থেকে প্রথমে সরল রাজীবের নেমপ্লেট! পরক্ষণে আবারও বসানো হল দরজায়
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Follow Us

কলকাতা: পদ্মের আরেক নাম রাজীব। তৃণমূল ছাড়ার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) বিজেপি যোগ যখন জোরাল হয়ে উঠছে, তখন বলা হতো যাঁর নামের সমার্থকই গেরুয়া দলের প্রতীক। তিনি অন্যত্র থাকবেন কী করে! কিন্তু ছ’মাস ঘুরতে না ঘুরতে পুজোর আগে সেই রাজীবের হাত থেকেই পদ্ম খসার আবহ। একুশের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপির গলার কাঁটা হয়ে উঠেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্যে বিজেপি বিরোধিতা থেকে শুরু করে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের বাড়িতে যখন তখন রাজীবের উপস্থিতি, নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়িয়েছে বঙ্গ পদ্ম শিবিরে। এরই মধ্য়ে সোমবার হঠাৎই দেখা গেল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য যে ঘর বরাদ্দ করা হয়েছিল, সেখানে তাঁর নেমপ্লেট নেই। শুরু হয় গুঞ্জন, এবার পাকাপাকি ভাবেই বোধহয় বিজেপি তাঁকে ছেঁটে ফেলতে চলেছে। এই জল্পনা জোরদার হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবারও দেখা যায় সেই ঘরের সামনে রাজীবেন নেমপ্লেট ঝুলছে।

বিজেপির (BJP Hestings Office) হেস্টিংসের দফতর। সেখানকার নবম তলায় ৮১১ নম্বর ঘর। এই ঘরটি বরাদ্দ ছিল ভোটের আগে ‘নাটকীয়’ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। রবিবার পর্যন্ত এই ঘরে রাজীবের নেমপ্লেট দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার আচমকাই দেখা যায় সে ঘরের দরজায় নেমপ্লেটের জায়গা ফাঁকা। নতুন কোনও নামের অপেক্ষায়। এরপরই উঠে আসে প্রশ্ন, তবে কি এবার বিজেপি থেকে ছেঁটে ফেলা হতে চলেছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে? এই নেমপ্লেট সরানো কি তারই প্রথম ধাপ? কিন্তু এ নিয়ে প্রকাশ্যে বিজেপির কেউই কোনও মন্তব্য করেননি। বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যায়, ওই দরজায় আবারও রাজীবের নাম সম্বলিত একটি প্লেট লাগানো হয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই বাংলার রাজনীতির আঙিনায় যে সমীকরণ তা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে বার বারই বদলেছে। যখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েছে মুকুল রায়ের, তখন সব থেকে বেশি দ্বিতীয় যে নাম চর্চায় থেকেছে, তা রাজীবেরই। হাওড়া ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ভোটের মুখে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ বিমানে চেপে একদল লোক নিয়ে গিয়ে দিল্লিতে রাজীবের পদ্ম-যোগ পর্ব নিয়ে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা-পর্যালোচনা চলেছে একটা সময়। এখনও তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারাও সুযোগ পেলেই সেই ‘বিমান খোঁচা’য় বিদ্ধ করেন রাজীবকে। এসবের মধ্যেই ভোটে হেরে রাজীব আবারও ঘাসফুলমুখী হতে শুরু করেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর রাজীব ফেসবুক পোস্টে বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তৃণমূলের সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন। সেই প্রথম! এরপর একাধিক বার পুরনো দলের একাধিক নেতার ফ্ল্যাট-বাড়িতে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যদিও সব ক্ষেত্রেই সৌজন্য সাক্ষাতের দোহাই দিয়েছেন রাজীব। তবে বিজেপিও যে তাঁকে নিয়ে খুব একটা আমল দেন, তেমনটাও দেখা যায়নি।

গত মাসেই অবশ্য দলের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল রাজীব ‘চ্যাপ্টার’ খুব তাড়াতাড়ি  ‘ক্লোজ’ করতে চলেছে বিজেপি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে সেই সময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢুকতে দেখা যায়। প্রায় ৩০ মিনিট পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপরই রাজীবকে নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয় বিজেপির অন্দরে। শমীক ভট্টাচার্য সেই সময়ই বলেছিলেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ‘সিলেবাসে নেই’।

সোমবার হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয় থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথমে নেমপ্লেট সরে যাওয়ায় মনে হয়েছিল এবার বোধহয় সত্যিই রাজীবকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। কারণ, বিজেপির অন্দরের খবর, এই মুহূর্তে দলের কোনও কাজেই রাজীব আসেন না। হেরে যাওয়ার পর থেকে কার্যত দলীয় কার্যালয়ে আসা তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকী ভোটের পর হাওড়ায় বিজেপি কর্মীরা যেখানের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন, সেখানেও দলীয় কর্মীদের পাশে গিয়ে রাজীব দাঁড়াননি বলে ক্ষোভ রয়েছে বিজেপির অন্দরে। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, দলের পাশে না থাকলে, কেনই বা দলীয় দফতরে সেই নেতার আলাদা ঘর থাকবে। যদিও এদিন বিকেলে ফের নেমপ্লেটটি দেখা যায় ওই দরজায়।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বিজেপি নেমপ্লেটের রাজনীতি করে না। ঘর আসবে, যাবে। নেমপ্লেটও থাকবে, যাবে। কিন্তু দলের পতাকা থেকে যাবে।”

আরও পড়ুন: ‘মা এটা কী করল? আমার কথাও একবার ভাবল না?’ ভয়ঙ্কর পরিণতি তৃণমূল নেত্রীর, কান্নায় ভেঙে পড়ল মেয়ে

Next Article