কলকাতা: একুশের বাংলার বিধানসভা ভোটের এপিসেন্টার ছিল নন্দীগ্রাম (Nandigram)। আর উপনির্বাচনে ভরকেন্দ্র ভবানীপুর (Bhabanipur)। নন্দীগ্রামে মমতাকে পরাস্ত করা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhiakri) এদিন ছিলেন ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের সঙ্গে। প্রিয়াঙ্কা মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘এই লড়াই অখণ্ড ভারতবর্ষের লড়াই। এক দেশের লড়াই।’
সোমবার সকালে ভবানীপুরের গোলবাড়ি মন্দিরে পুজো দেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। এরপর আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন পত্র পেশ করেন তিনি। প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ অর্জুন সিং, দীনেশ ত্রিবেদী, শিশির বাজোরিয়া প্রমুখ।
মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রিয়াঙ্কার হুঁশিয়ারি, “বাংলা বাঁচাও, বাঙালি বাঁচাও স্লোগানকে সামনে রেখে লড়ব। একবার ভবানীপুরে ভোট হয়েছে। মানুষ তাঁদের রায় দিয়েছেন। তারপরও মুখ্যমন্ত্রী নিজের চেয়ার বাঁচাতে জোর করে ভোট করাচ্ছেন। আসলে উনি ভাবেন, উনি ছাড়া ওই চেয়ারে ওনার দলের আর কারও বসার যোগ্যতা নেই। সে জন্য কুর্সিটা ধরে রাখার জন্য ভোট করালেন।” আর শুভেন্দু বললেন, কেন তাঁকে জেতাতে হবে।
শুভেন্দুর কথায়, “আমরা আমাদের আস্থার জায়গা মন্দিরে পুজো দিয়ে লড়াকু যুব নেত্রী, তরুণ আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের মনোনয়ন ফাইল করার জন্য আমরা এসেছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “শাস্ত্রমতে, পঞ্জিকা-মতে শুভ কাজের জন্য আমরা এসেছি। তবে লড়াইটা প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের একার নয়। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের লড়াই। এমনকি আমি বলব, যে মানুষরা অখণ্ড ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেন, এক দেশ, শ্রেষ্ঠ দেশের স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের সকলের লড়াই।”
এর পর শুভেন্দু অভিযোগ করেন ভোট পরবর্তী বাংলায় বিজেপির ৫৫ জন কর্মী সমর্থককে মারা হয়েছে। ভোটাররা পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন। মহিলারা ধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পর্যন্ত ভোটের পর কোর্টকে রিপোর্ট করেছে পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই, শাসকের বাংলা। এর পর তাঁর পাশে বসা বারাকপুরের বিজেপি সাংসদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, অর্জুন সিংকে প্রতিমাসে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ভবানীপুরের ভোটারদের উদ্দেশে বিধানসভার বিরোধী নেতার আববেদন, ভোটের দিন ঘরে বসে থাকবেন না। এই লড়াই সবার লড়াই।
প্রসঙ্গত, ভবানীপুরে তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। সম্প্রতি ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাকে সামনে রেখে বার বার যাঁর নাম শিরোনামে উঠে এসেছে। দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরাও বার বার বলেছেন, প্রিয়াঙ্কা তাঁদের লড়াকু নেত্রী। প্রিয়াঙ্কার লড়াই-ই ভোটের পরে হিংসা নিয়ে বিজেপির যে অভিযোগ ছিল, তাতে সিলমোহর এনে দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সিটও গঠিত হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিরুদ্ধে প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা জানাচ্ছেন, “জয় নিয়ে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। আমি মানুষের জন্য লড়াই করছি। বিধানসভা নির্বাচনে খুনের খেলা খেলেছে ওরা। এবারও যদি তাই করে তাহলে তো গণতন্ত্রের কোনও মানে হয় না। এই সরকার খুনীদের সমর্থন করেছে। এর প্রতিবাদে আওয়াজ তুলতে হবে।”
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: গাড়ি-বাড়ি নেই মুখ্যমন্ত্রীর, জানেন মমতার মোট সম্পত্তি কত?