কলকাতা: খর্ব হচ্ছে গোপনীয়তার অধিকার, সংবিধান মেনে রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। এমন আর্জি নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা। তাঁর দাবি, অর্ধ সত্য খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তার জেরে মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে তাঁর ও তাঁর পরিবারের। এই দাবি করেই রক্ষাকবচ চাইছেন রুজিরা। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই দাবি করেছে, রুজিরা নিজেকে থাইল্যান্ডের নাগরিক বলে পরিচয় দিয়েছেন। ভারতীয় সংবিধান মেনে তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া সম্ভব নয়ট বলে সওয়াল করেছে সিবিআই।
মৌলিক অধিকারের আইনের ভিত্তিতে রক্ষাকবচ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রুজিরা। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ আইনের হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনও মানুষকে তার জীবনের অধিকার বা স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যায় না। সেই আর্টিকল ২১-এর উল্লেখ করেই রক্ষাকবচের দাবি জানিয়েছেন অভিষেক-পত্নী।
সিবিআই-এর আইনজীবী বিল্লদ্বল ভট্টাচার্য এদিন প্রশ্ন তোলেন, সংবিধানের ধারা কি একজন বিদেশিকে সত্যিই এই অধিকার দেয়? তিনি উল্লেখ করেন, অভিষেকের স্ত্রী বিদেশি, থাইল্যান্ডের বাসিন্দা। এই প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে রুজিরার আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, ১৪ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকদের রক্ষাকবচ দেওয়ার কথা বলা নেই।
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রুজিরাকে নোটিস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এরপরই রুজিরার অভিযোগ, একশ্রেণির সংবাদমাধ্যম তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে প্রচার করছে। তাঁকে এবং তাঁর স্বামীকে জড়িয়ে মিথ্যে কথা ও অর্ধ সত্য প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। রুজিরার আইনজীবী এদিন সওয়াল করেছেন, অভিযুক্তদেরও কিছু অধিকার থাকে। এ ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার নষ্ট হচ্ছে। পরিবারের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে।
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বক্তব্য, অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোনও নির্দেশ দেওয়া যায় না। কাল কী হবে সেটা আজ থেকে অনুমান করে কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায় না। বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, এগুলো রাজনৈতিক অপপ্রচার হতে পারে, আদালত এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ‘মানহানির মামলা করতে পারতেন’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। বুধবার ফের এই মামলার শুনানি।