Suvendu Adhikari On the Way Of Sandeshkhali: দরকার পড়লে তিনি ধরনাতেও বসবেন। তবে আইন কোনওদিনও ভাঙবেন না বলেও এদিন সাফ বলে দিলেন শুভেন্দু। এদিকে, সন্দেশখালি রীতিমতো দুর্গের চেহারা নিয়েছে। গ্রামে ঢোকার মুখেই বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলেছে পুলিশ।
সন্দেশখালিতে ভয়ঙ্কর ঘটনা
Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us
কলকাতা: সন্দেশখালি যাওয়ার পথে জায়গায় জায়গায় তাঁর পথ আটকেছে পুলিশ। গাড়িতে উঠে চলেছে ছানবিনও। সব টপকে বেলা সওয়া দুটো নাগাদ সন্দেশখালি পৌঁছন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে তিন বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, তাপসী মণ্ডল, শঙ্কর ঘোষ। কিন্তু সরবেড়িয়া পৌঁছতেই পুলিশ কর্তার সঙ্গে ব্যাপক তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। মিনাখাঁ-র এসডিপিও-র সঙ্গে তিনি বচসায় জড়িয়ে পড়েন। শুভেন্দুর বাসের চাকা সেখানেই স্তব্ধ হয়। বাস থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হন শুভেন্দু। সেখানেই বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, পুলিশ বুট দিয়ে তাঁকে মেরেছেন। তাঁর পা চিপে দিয়েছেন। রাস্তায় বসে পড়েন শুভেন্দু। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এক নজরে দেখুন গোটা পরিস্থিতি…
KEY HIGHLIGHTS
বাসে বসেই শভেন্দু বলেন, “আমরা ১৪৪ ধারা মেনেই যাচ্ছি। আমরা গ্রামের নির্যাতিত মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করব। যে সমস্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করব। “
কিন্তু পুলিশ বাধা দিলে? শুভেন্দু বললেন, “আটকালে, পুলিশ আটকাবে। পুলিশের সঙ্গে মারপিট করব না। যেখানে আটকাবে, সেখানে কী করব, দেখতে পাবেন। আমার প্রতিবাদ থাকবে। তবে আইন মেনে, গণতন্ত্র মেনে।”
বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, “আমরা ওই সমস্ত মা-বোনেদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার চেষ্টা করব, যাঁরা এতদিন ধরে অত্যাচারিত হয়েছেন। পুলিশ তো এখন তৃণমূলের ক্যাডার। তাই তাঁরা গণতন্ত্র মানেন না।”
শুভেন্দু আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “এই সময়কালের মধ্যেই ওই মহিলাগুলোকে চুক্তিভিত্তিক কাজের লোভ, ভয় দেখিয়ে, প্রভাবিত করে চাপে রাখতে পারে। সরকার বলতেই পারে, ১০ হাজার টাকা দিচ্ছে, মুখ বন্ধ করো। কারণ প্রচুর কালো টাকা রয়েছে।”
বাসন্তী হাইওয়েতে শুভেন্দু অধিকারীর বাস আটকায় পুলিশ। পুলিশ একেবারে শুভেন্দুর বাসের ভিতর ঢুকে যায়। বাস থেকে বেরিয়ে আসেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন করেন, “দায়িত্বে কোন অফিসার রয়েছেন?” পুলিশের তরফ থেকে উত্তর আসে ‘OC’। শুভেন্দু তখন বলেন, “আমার লেভেল ওসি লেভেল নয়। আইপিএস-কে ডাকুন। আপনার লেভেল আমার লেভেল নয়। আমি আইপিএস-এর সঙ্গেই কথা বলব।” পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি পুলিশ কর্তাদের।
গাড়ির ভিতর ঢুকে, পরিস্থিতি দেখে বাস থেকে নেমে যায় পুলিশ। বাস আবার সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেয়।
বেলা সওয়া দুটো পর্যন্ত সন্দেশখালিতে পৌঁছান শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে সায়েন্স সিটির কাছে বাস আটকায় পুলিশ। কিন্তু সেসব কাটিয়ে সরবেড়িয়া পর্যন্ত পৌঁছয় শুভেন্দুর বাস। সেখানে পুলিশের কড়া প্রহরা। পুলিশ বাস আটকায়।
সেখানে পুলিশের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশ বলেন, “আমি চার জনকে নিয়ে যেতেই পারেন। একাও যেতে পারেন। কিন্তু আপনি গেলে সেখানে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।” শুভেন্দু বলেন, “গ্রামবাসীরা থাকবে তো বাইরে লোক কোথায়? এর আগে তো রাজ্যপাল গিয়েছেন, জাতীয় মহিলা কমিশন গিয়েছে, আজ এসসি কমিশন গিয়েছে, তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হয়নি? আমরা গেলেই হবে?”
পুলিশ বলছে, “ওরা গিয়েছে পরিস্থিতি খারাপ হয়নি।” শুভেন্দু বলেন, “আমাকে আটকাচ্ছেন কেন? আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে হারিয়েছি।” পুলিশকর্তা তখন বলেন, “সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা শান্তির কথা মাথায় রেখে যেতে দিতে পারব না।”
আমিনুল ইসলাম খান, SDPO মিনাখাঁ, শুভেন্দুকে বলেন, “আমি আপনাকে অ্যালাও করছি না। তার কারণ আমি ওখানে গেলে গ্যাদারিং হতে পারে। আমি আমার দফতরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসরণ করছি। এটাই আমাদের নিয়ম।”
শুভেন্দু চিৎকার করতে থাকেন, “বলেন এটা আপনাদের নিয়ম নয়। এটা যা করছেন গায়ের জোরে করছেন।” রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক।
সরবেড়িয়াতেই বাস থেকে নেমে রাস্তায় বসে পড়েন শুভেন্দু। ব্যাপক তর্কাতর্কি হয় পুলিশ কর্তার।
শুভেন্দু বলেন, “আমি এখানে ধরনা দেব। পুলিশ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে ভালো, না হলে আমি আইনি লড়াইয়ে যাব। আমি পুলিশ বুট দিয়ে মেরেছে, জুতো দিয়ে আঘাত করেছে। পা চিপে দিয়েছে।”
২ ঘণ্টা পর ধরনা অবস্থান থেকে উঠে যান শুভেন্দু। আইনি লড়াইয়ের পথে যাবেন বলে জানান শুভেন্দু।