কলকাতা: ২২ ঘণ্টা পেরিয়েছে। কেটেছে একটা রাত। মঙ্গলবারই জলের বোতল, সঙ্গে থাকা খাবার সব এক জায়গায় জড়ো করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। হকের চাকরির দাবিতে দিনভর চলেছে হল্লাবোল… পুলিশি হুঁশিয়ারিতে আরও জোরদার হয়েছে আন্দোলন। সন্ধ্যার পর রাত। কিছুটা ক্লান্ত, শীর্ণ মুখগুলো। কেউ শুয়ে পড়েছেন রাস্তাতেই। কেউ গাছের গায়ে পিঠ ঠেকিয়ে বসেছেন। কেউ বা সেই ফেলে দেওয়া খালি জলের বোতলই মাথায় দিয়ে শুয়েছেন…চোখ বুজেছেন কেউ, তবে তা কয়েক মিনিটের জন্য, কেউ বা নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন গোটা রাত। আমরণ অনশনের প্রথম রাতটা কাটল এইভাবেই। ক্লান্তি গ্রাস করছে শরীর, ভেঙেছে গলা। তবুও চাকরির দাবিতে সকাল হতেই ফের স্লোগান। আবারও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা জড়ো হয়েছেন এক জায়গায়।
পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেছেন, আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের দাবি অন্যায্য। আইন মেনেই নিয়োগ হবে। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই যে বয়স পেরিয়ে গিয়েছে চল্লিশ। তাই তাঁরা তাঁদের দাবিতে অনড়। ইন্টারভিউ নয়, সরাসরি নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকারকে আইন বদলাতে হলে বদলাক। বয়সের বল রাজ্যের কোটেই ঠেলে দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
বুধবার সকাল থেকে ফের স্লোগানে মুখরিত হয়েছে করুণাময়ী চত্বর। সুর উঠছে ‘চলছে চলবে..’ চাকরিপ্রার্থীরা যে এখন ‘ডু অর ডাই’পন্থায় আন্দোলন চালাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করেছেন মঙ্গলবারই। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। তাঁর সাফ কথা, ‘মামলা বিচারাধীন, কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
প্রশ্ন থাকছেই, আমরণ অনশন কতদিন? টেট জট কাটবেই বা কীভাবে? অসুস্থতা, অসুবিধা, ঠাটা পোড় রোদ, বিনীদ্র রাত, পুলিশি চোখরাঙানিকে অগ্রাহ্য করেই আমরণ অনশন অব্যাহত চাকরিপ্রার্থীদের।
চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরাও সরব। এ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “অবস্থান অনশন চলছে, এটা চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। এটা মোটেই ভাল নয়। সরকারের ইচ্ছেও নেই, টাকা পয়সাও নেই যে নতুন চাকরি দেবে। এই সব ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ কী সেটা চিন্তার বিষয়। তাঁরা তাঁদের লড়াই করছে। আমরা পাশে আছি। সরকার তাঁদের পাশে নেই। সরকারের ইচ্ছে শক্তি নেই, এই সমস্যার সমাধান করার। “