কলকাতা: রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ। রবিবারই মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ঘোষণা করেছেন, সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকলেও আগামী ৯ জানুয়ারি স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট (SET) নেবে কলেজ সার্ভিস কমিশন। কিন্তু, কোভিড আবহে আপাতত পরীক্ষা স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিল সরকারি কলেজ শিক্ষক সংগঠন।
আগামী ৯ জানুয়ারি রবিবার সেট-এর (SET) পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সরকারি কলেজ টিচার্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে। সূত্রের খবর, আগামী ১৫ জানুয়ারির পর পরীক্ষা হলেও হতে পারে। অধ্যাপক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একাধিক পুলিশকর্তা, কলেজ সার্ভিস কমিশন এর স্টাফ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হোক। তবে, সরকারি তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
‘অ্যাক্রিডিটেশন’-এর কারণে গতবছর সেট পরীক্ষা হয়নি। দু’বছর পর পরীক্ষা হওয়ায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। প্রায় ৯০ হাজার পরীক্ষার্থী এ বার পরীক্ষায় বসবেন। কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই প্রায় ২০০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে সেট পরীক্ষা হওয়ার কথা। এর আগে ৮০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হত বলেই জানিয়েছে কলেজ সার্ভিস কমিশন। সোমবার কড়া বিধিনিষেধ আরোপ হতেই আশঙ্কায় ছিলেন পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু কলেজ সার্ভিস কমিশনের ঘোষণায় চিন্তা মুক্ত হয়েছিলেন। এ বার ফের, কপালে ভাঁজ পরীক্ষার্থীদের।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল, ৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রথম পত্রের পরীক্ষা হবে। দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হবে বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ২ পর্যন্ত। সকাল ৯টার মধ্যে সকল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে রিপোর্ট করতে হবে।
একদিকে কোভিড পরিস্থিতি অন্যদিকে, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, সবদিক খতিয়ে দেখেই প্রায় ৯০ হাজার পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। জানা গিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের নির্বাচিত জায়গা অনুযায়ী, প্রত্যেকটি সাব ডিভিশন ধরে ধরে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে বাড়ি থেকে নূন্যতম দূরত্বে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেন। পাশাপাশি, প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে যথোপযুক্ত স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা আদৌ হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকছে।
উল্লেখ্য, করোনার দৈনিক সংক্রমণ একধাক্কায় বেড়ে ১৪ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গেল বুধবার। মঙ্গলবার এই সংখ্যাটা ছিল ৯ হাজারের কিছু বেশি। একদিনে প্রায় পাঁচ হাজার বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি কলকাতায়। এরপরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছেন ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন: COVID19 in Kolkata: ২৫ থেকে ৪৮! একলাফে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জ়োন