কলকাতা: ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কোমর বাঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপি-বিরোধী দলগুলি গতকাল বৈঠকে বসছিল পটনায়। একেবারে চাঁদের হাট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব, রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, অরবিন্দ কেজরীবাল… বিরোধী দলগুলির তাবড় নেতারা ছিলেন সেখানে। সকলে মিলে একসঙ্গে বসে সাংবাদিক বৈঠকও করেছিলেন। যেন, হাম সব সাথ হ্যায়… এমন একটা ছবি তুলে ধরার চেষ্টা। কিন্তু বাস্তব কি সত্যিই তেমন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ কিন্তু বলছেন, বিজেপি বিরোধী জোট একেবারে ঘেঁটে ঘ।
কিন্তু কেন? বিজেপি বিরোধী ঐক্যের ছবি তো কাল বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাহলে এক ছাতার তলায় সব বিরোধী দলগুলিকে আসার ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়? রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, আমলা ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের অধ্যাদেশকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের সঙ্গে আম আদমি পার্টির এক টানাপোড়েন চলছে। ফলে, এখন অবস্থাটা কিছুটা এমন যে কংগ্রেস যদি কেন্দ্রের অধ্যাদেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করে, তাহলে কেজরীবালরা জোটে কতটা থাকবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে।
সমস্যা রয়েছে আরও। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সিপিএম, কংগ্রেস আর তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে জট তৈরি হয়ে রয়েছে। বাংলায় কংগ্রেস আর সিপিএমের ঘোষিত জোট না হলেও, মাঠে-ময়দানে একে অপরের পাশে দাঁড়াচ্ছে তাঁরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে রাস্তায় নামতেও দেখা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতিতে কীভাবে এই তিন দল এক ছাতার তলায় আসবে? যদি আসে তাহলে রাজ্য রাজনীতিতে তার কী প্রভাব পড়বে, এমন প্রশ্নও ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে।
গতকালের বৈঠকের পর আজ যেমন সিপিএম মুখপত্রের প্রথম পাতায় বিরোধী জোটের ছবিতে মমতাকে দেখা যায়নি। আবার তৃণমূল মুখপত্রের ছবিগুলিতে সিপিআইয়ের ডি রাজা, কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীদের দেখা গেলেও সীতারাম ইয়েচুরিকে দেখা যায়নি।
এদিকে আবার কেরলের ভোট ময়দানে কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে সম্মুখ সমর। উত্তর প্রদেশেই বা অখিলেশ যাদবদের সপার সঙ্গে কংগ্রেসের সমীকরণ কী রকম হবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। এদিকে আবার পঞ্জাবে সদ্য কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে ছেঁটে সরকার গড়েছে কেজরীবালের দল। সব মিলিয়ে গতকাল একঝাঁক মুখ একসঙ্গে দেখা গেলেও, শেষ পর্যন্ত এক ছাতার তলায় এনে কোনও বিরোধী জোট করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন অনেকে।