কলকাতা: সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে আদৌ সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়া হবে কি না তার রায়দান স্থগিত থাকল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, ” রাজ্য পুলিশ তদন্তে যে স্থগিতাদেশ আছে, সেটাই থাকবে। কোনভাবেই রাজ্য পুলিশ তদন্ত করতে পারবে না শেখ শাহজাহানের মামলায়। পুলিশের তরফে বলা হয়, “কেন জুডিশিয়াল কাস্টাডি দরকার। ইডি বা সিবিআই অভিযোগ দায়ের করলেও তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি।”
প্রধান বিচারপতি শেখ শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, “আপনাকে তো পাওয়াই যাচ্ছিল না। অন্য বেঞ্চে গেলে অসুবিধা কারণ আপনি গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিম্ন আদালতে আগেই আগাম জামিনের আর্জি জানানো হয়। মাত্র চারটে কেসে ইডি নিম্ন আদালতে যায়।” শেখ শাহজাহানের তরফ থেকে বলা হয়, “আমায় আইনের নিয়ম নেমে শোনার সুযোগ দেওয়া হোক।”
ইডি-র তরফ থেকে তখন বলা হয়, “৫৬ দিন পালিয়ে ছিলেন। কেউ গ্রেফতার করেনি। তাহলে কীভাবে রাজ্য তদন্ত করবে। সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়া হোক।”
ইডি-র আইনজীবী এএসজি বলেন, “যদি তাই হয় তাহলে তদন্ত নষ্ট হবে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে রাজ্য। তদন্ত না করতে পারলে গ্রেফতারের অর্থ কী?” এএসজি-র তরফে সওয়াল করা হয়, “আজই স্থির করা হোক, তদন্ত কে করবে, সিবিআই কে তদন্তভার দেওয়া হোক।”
কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসেটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী বলেন, “PMLA অ্যাক্টে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হোক।” রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত বলেন, “শাহজাহানের বাড়িতে যখন রেডে যায় পুলিশকে জানানো হয়নি। সেখানে ইডি অফিসারদের উপর সাধারণ গ্রামবাসীরা চড়াও হয়। তারপর মামলা রুজু করে পুলিশ।”
এজির তরফ থেকে আরও বলা হয়, “চার বছরে ৪২টি কেস রুজু করা হয়েছে, সেটাই হাতিয়ার করা হচ্ছে। পুলিশ গ্রেফতার করার পরেও কীভাবে পুলিশ গোটা ঘটনায় যুক্ত? যে অভিযুক্ত সে নিজেও ট্রান্সফারের কথা বলেনি।”
ইডি-র তরফে এমভি রাজু বলেন, “লোকাল পুলিশ নয়। যার জন্য ইডি অফিসার মার খায়, তিনি তৃণমূলের নেতা। কিন্তু লোকাল পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করে।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “৫ জানুয়ারি অভিযোগ করা হলে ৯ জানুয়ারি FIR কেন? ৩০৭ খুনের চেষ্টা ধারা কেন যুক্ত হয়নি।” এজি-র বক্তব্য, “ইডি ৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে আটটায় অভিযোগ করে, ৩০৭ ধারা যুক্ত হয়েছে। রাজ্য কাউকে রক্ষা করছে না।”
ইডি-র তরফে ধীরজ ত্রিবেদী সওয়াল করেন, ” ৩টি এফআইআর হয়। শাহজাহানকে যখন ফোন করে বলা হয় রেড হবে, তারপর প্রায় পনের হাজার লোক জড়ো হয়। ওনার নিরাপত্তারক্ষী একজন গুন্ডা সে ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর করে। একজন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সেখানে সই করেন। ইডির এফআইআরের কোনও তদন্ত করেনি পুলিশ। এফ আই আরে সব জামিন যোগ্য ধারা দেওয়া হয়। এখান থেকে স্পষ্ট পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।”