কলকাতা : নিরাপত্তা বেষ্টনী এড়িয়ে ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাসভবন চত্বরে। কয়েক ঘণ্টা সেখানে ঘাপটি মেরে বসেও ছিলেন। এরপর নজরে পড়েন নিরাপত্তারক্ষীদের। ধৃত হাফিজুল মোল্লাকে জেরা করে একের পর এক তথ্য উঠে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ নবান্নে স্বরাষ্ট্র দফতরে ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল কলকাতা পুলিশের গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম(SIT)। মুখবন্ধ খামে ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একাধিক পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসা তথ্য সমেত ওই রিপোর্ট জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ৩ জুলাই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চত্বর থেকে ধরা হয় হাফিজুল মোল্লাকে। তাঁকে তুলে দেওয়া হয় কালীঘাট থানার পুলিশের হাতে। বছর তিরিশের হাফিজুলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হাসনাবাদ থানার আষাড়িয়া নারায়ণপুর গ্রামে। পেশায় তিনি গাড়িচালক। তাঁর পরিবারের দাবি, হাফিজুলের মানসিক সমস্যা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চত্বরে ওই যুবক কীভাবে ঢুকে পড়ল, তা খতিয়ে দেখতে সিট গঠন করে কলকাতা পুলিশ। সিটের সদস্যরা হাফিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। নারায়ণপুর গ্রামে তাঁর বাড়িতেও যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
হাফিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একের পর এক তথ্য পান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে যাওয়ার আগে, কয়েকবার ‘রেইকি’ করেছিলেন তিনি। এমনকী স্থানীয় বাচ্চাদের লজেন্স, কোল্ড ড্রিঙ্ক খাইয়ে বন্ধুত্বও করেন বলে সূত্রের দাবি। তাঁর কাছ থেকে ১১টি সিম পাওয়া গিয়েছে। হাফিজুল একাধিকবার বাংলাদেশে চোরাপথে যাতায়াত করেছেন। ভিনরাজ্যের খুনি, ডাকাত-সহ একাধিক দুষ্কৃতীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। কোনও পাচারচক্রে যুক্ত ছিলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে।
হাফিজুলকে গ্রেফতার করার পর প্রথমে তাঁর কাছ থেকে কোনও মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। পরে তাঁকে জেরা করে জানা যায়, ঘটনার দিন রাতে একটি মোবাইল ফোন তাঁর সঙ্গে ছিল। সূত্রের খবর, সিসিটিভিতে দেখা যায়, একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন হাফিজুল। সেই মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত হয়েছে ইতিমধ্যেই। তাতে একাধিক তথ্য উঠে আসছে বলে জানা যাচ্ছে। উদ্ধার হওয়া মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের ছবি এক বা একাধিক নম্বরে পাঠানো হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন হাফিজুল। ১৮ জুলাই পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালতে। ১৮ জুলাই ফের আদালতে তোলা হবে তাঁকে। ওইদিন সিটের তদন্ত রিপোর্টের কথা আদালতে উল্লেখ করা হতে পারে।