ভোটসঙ্গী মানেই ‘জোটসঙ্গী’ নয়, আইএসএফ নিয়ে সুজনদের সাফ বার্তা ইয়েচুরির

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঋদ্ধীশ দত্ত

Aug 08, 2021 | 12:20 AM

সব কর্মসূচিতে মোর্চাকে গত ভাবে না নিলেও চলবে বলেই মত দিয়েছেন ইয়েচুরি বলে মনে করছেন সিপিএমের নেতারা।

ভোটসঙ্গী মানেই জোটসঙ্গী নয়, আইএসএফ নিয়ে সুজনদের সাফ বার্তা ইয়েচুরির
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আইএসএফ নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন ইয়েচুরি

Follow Us

কলকাতা: মোর্চা অটুট থাকছে। ৭২ ঘণ্টা আগেই আইএসএফ-কে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কিন্তু শনিবার আসতে আসতে সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ যেন আরও অথৈ জলে পড়ল। কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, তাতে যেন এই জল্পনা আরও উস্কে গিয়েছে। কিছুটা অধীর চৌধুরীর সুরেই তিনি এই জোটকে শুধুমাত্র নির্বাচন-কেন্দ্রিক বলে আখ্যা দিয়েছেন বলে খবর সূত্রের।

আইএসএফ যে নিয়ে যে কংগ্রেস ও বাম শরিকরদের একাংশ খুশি নয়, সেটা এতদিনে হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা। বঙ্গ সিপিএম অবশ্য নিয়ে চলতে চায় সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক থাকা দলকে। যৌথ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিমান বসু। কিন্তু কেন্দ্রীয় সিপিএম যে সহমত নয়, সেটা বুঝিয়ে দিতে কোনও কসুর করেননি দলের সাধারণ সম্পাদক।

শনিবার ছিল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিন। সেই বৈঠকেই সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে সংযুক্ত মোর্চা গঠনের পিছনে ছিল মূলত নির্বাচনী কৌশল। ভোটের আগে হওয়া এই জোটকে নির্বাচনী পরিকল্পনার অংশ এবং আসন সমঝোতার রাজনীতি হিসেবেই দেখা উচিত বলেও এ দিনের বৈঠকে জানিয়েছেন ইয়েচুরি। একই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভোটসঙ্গী মানেই জোটেও তাদের সঙ্গী করে এগোতে হবে, তার কোনও মানে নেই।

অর্থাৎ, সব কর্মসূচিতে মোর্চাকে গত ভাবে না নিলেও চলবে বলেই মত দিয়েছেন ইয়েচুরি বলে মনে করছেন সিপিএমের নেতারা। তাঁদের মতে, মোর্চা হয়তো উপনির্বাচন বা পুরসভার ভোটে থাকবে। কিন্তু রোজকার কর্মসূচির সঙ্গে তার সম্পর্ক না থাকলেও চলবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইয়েচুরির মনোভাবের পরে এ কথা বলা যায়, মোর্চার যৌথ কর্মসূচির পথে হাঁটার বিষয়টি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

এ দিনের বৈঠকে তিনি আরও বলেন, বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে সিপিএমকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। কারণ, কংগ্রেস ছাড়া তাঁদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংগঠন রয়েছে। যা অন্য আঞ্চলিক দলগুলির নেই। তাই তাঁদের বেশি করে দায়িত্ব নিতে হবে বলে এদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বলেছেন ইয়েচুরি। তবে রাজ্যওয়াড়ি লড়াইয়ে অবশ্য তা স্থির হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর প্রেক্ষিত অনুসারে, তা-ও স্পষ্ট করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক।

কেন পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী লড়াইয়ে বিজেপি আর তৃণমূলকে এক করে দেখা হয়েছিল, তা নিয়েও এ দিন ব্যাখ্যা দেন এ রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা সুজন চক্রবর্তী, মৃদুল দে’রা। তাঁরা বলেন যে, এ রাজ্যে তৃণমূলের জমানায় বিজেপি বেড়েছে। বিধায়ক সংখ্যা এক লাফে ৭৭ পৌঁছেছে ৩ থেকে। মমতা সরকারের সময়েই সঙ্ঘের শাখা কয়েকশো গুণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল আর বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করা ছাড়া উপায় ছিল না। তা হয়তো মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি, সে কথাও এদিনের বৈঠকে আক্ষেপের সুরে বলেন সুজনরা।

কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের তৃতীয় দিন, রবিবার পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ, স্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কোন রাজ্যে দলের সংগঠন কীভাবে মজবুত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সে তালিকায় যুক্ত হতে পারে কোভিড আবহে কীভাবে সম্মেলনে গুলি করা হবে? সেখানে প্রতিনিধির সংখ্যা কেমন রাখা যায়, তরুণ প্রজন্মকে আরও কীভাবে যুক্ত করা যায় সংগঠনের সঙ্গে-সে সবও আলোচনা হতে পারে। আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনার কবলে সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, অল্পের জন্য রক্ষা!

 

Next Article