কলকাতা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ তো রয়েছেই, তার উপর এখন চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গির সংক্রমণ। দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকাতেও বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ডেঙ্গির সংক্রমণ সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। গত কয়েকদিনে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ থেকে বেড়ে ৫৬ জন হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দক্ষিণ দমদমের পৌর প্রশাসক পাঁচু রায়ের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে। যেভাবে ডেঙ্গি চোখ রাঙাচ্ছে তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকায়। পৌরসভা সূত্র মারফত খবর, ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে চলেছে পৌরসভা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামিকাল বৈঠকে বসবে পৌরসভার পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় আগামী পদক্ষেপ নিয়ে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ২৭ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে সাড়ে ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গুতে। হাওড়া নিয়ে বিশেষ চিন্তায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ গুন বেড়ে গেল? একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি নিয়েও। তা যে হাওড়ায় ধাক্কা খেয়েছে পরিসংখ্যানই তার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। ডেঙ্গুর দাপট বাড়ছে রাজ্যে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২৭ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বরের মধ্যে বাংলায় ডেঙ্গুর কবলে পড়েন ৬৫০ জন। গত বছর এই সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১৯।
যে কোনও রোগেরই উপসর্গ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগ মোকাবিলার প্রথম ধাপটাই আপনি জেনে গেলেন। উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সময় মতো রোগ নির্ণয় করা দরকার। চোখের ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, বমি, হাড়ের ব্যথা, ফুসকুড়ি, পেশী ব্যথা, অস্বাভাবিক রক্তপাত, জয়েন্টে ব্যথা, ক্লান্তি বা অস্থিরতার মতো লক্ষণগুলি দেখা দিলে সতর্ক হোন। এগুলি ডেঙ্গুর উপসর্গ।
ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে বিপদজনক ডেন ২ ও ডেন ৩। এ রাজ্যে এই দুই সেরোটাইপেরই বাড় বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেখা গিয়েছে ডেন ২ সব থেকে মারাত্মক। এর পিছনেই রয়েছে ডেন ৩। মাইক্রো বায়োলজিস্টরা বলছেন, ‘ডেন ২ ডেন ৩ মারাত্মক। অথচ এবারও শোনা যাচ্ছে এই দু’টো এ রাজ্যে ভালই পাওয়া যাচ্ছে। ডেন ৩ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’ সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর ছয় থেকে সাতদিনের মধ্যে সেরে যায়। হেমারেজিক ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেশি। ডেন ২ বা ডেন ৩ ঘটাতে পারে ডেঙ্গু হেমারেজ। এর ফলে শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।