কলকাতা: কালীঘাটের ভাইফোঁটা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চা নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই তা নিয়ে জোর জল্পনা থাকে। ভাইফোঁটায় কাদের কাদের দেখা যাবে, তা নিয়ে জোর চর্চা চলে রাজনৈতিক মহলে। এদিন দুপুরে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে দেখা মেলে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতার প্রিয় ‘কাননে’র সঙ্গে কী কথা হল কালীঘাটের ভিতরে? কোনও কি সিগন্যাল পেলেন তিনি? এই বিষয়ে সুকৌশলে শোভন বাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান, রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে কী ধরনের কথা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ আমাদের মধ্যে। তা খোলসা করার জন্য যখন যেমন পরিবেশ পরিস্থিতি আসবে তখন দেখবেন আরও খোলসা হয়ে যাবে।” তাহলে কি এবার ঘাসফুলে প্রত্যাবর্তন করছেন তিনি? সেই বিষয়ে শোভন বাবুর সাফ বক্তব্য, “এটা অপ্রাসঙ্গিক একদম। এতটা দূর এগিয়ে যাওয়ার পর যদি আপনারা বলেন কী হবে, না হবে…”
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “কানন আর দিদির যা সম্পর্ক, তাতে ও যাবে, দিদির আশীর্বাদ নেবে, দিদি ওকে ফোঁটা দেবে… সেটা তো দিদি নিজের কাজ করছেন, ভাই ভাইয়ের কাজ করছে। এটা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু।” বৈশাখীর বক্তব্য, কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কত কত কর্মী লিখেছেন, এই ফ্রেমটি তাঁদের কাছে প্রত্যাশিত ছিল। দাদা দিদির বাড়িতে গিয়েছেন, এটা আমরা দেখতে চেয়েছিলাম, এই ফ্রেমটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল। এটা আমাদের পাওনা।”
কালীঘাটে মমতার কাছে ভাইফোঁটা নিয়ে ফেরার পর শোভন বলেন, “২০১৯ সালের ভাইফোঁটাতেও গিয়েছিলাম। আজ আবার আমরা গিয়েছি। মাঝে যে দুটি বছর গিয়েছে, করোনা আমাদের জীবন থেকে বহু মানুষকে কেড়ে নিয়েছে। এখন করোনাকাল কেটেছে, স্বাভাবিক হয়েছে। মমতাদির কাছ থেকে ভাইফোঁটা পাওয়া এক অন্য ধরনের অনুভূতি। সেই অনুভূতি যেভাবে উপভোগ করার, সেভাবেই উপভোগ করছি।”
এই নিয়ে যা কিছু বিচার বিশ্লেষণ হচ্ছে, তাকে সাবলীল বিষয় হিসেবেই দেখছেন শোভন। বললেন, “মমতাদির সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তাঁর যে স্নেহ-ভালবাসা, তাঁর প্রতি আমাদের যে শ্রদ্ধা রয়েছে… এর আগেও আমরা যখন নবান্নে গিয়েছিলাম আমি-বৈশাখী বেরিয়ে বলেছিলাম, ৪৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে যদি ডোরিনা ক্রসিংয়ে বলতেন পিচ গলে গিয়েছে ওখানে খালি পায়ে দাঁড়াতে হবে, তাহলে সেটাও করা আমার কর্তব্য বলে মনে হত।” তাঁর আরও সংযোজন, “গত ৪৪ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ছাত্রনেত্রী ছিলেন, সেই সময় থেকে তিনি আমাদের আবেগ, উপদেশ, নির্দেশ, সিদ্ধান্ত সবটাই মমতাদি।”