কলকাতা: প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের চাকরিতে থাকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় এমনটাই বললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। অন্যদিকে, সিবিআই তদন্তের পর যে রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই যে তথ্য দিয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আইনজীবী। ‘নাইসা’ নামে যে সংস্থা থেকে হার্ড ডিস্ক জোগাড় করে প্রমাণ পেশ করেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষ করে দ্রুত বিচাররে জন্য বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বা রসিদির বিশেষ বেঞ্চ তৈরি হয়। সেই বেঞ্চেই চলছে মামলার শুনানি।
প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর পরে কেন মামলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিয়েছেন, গাজিয়াবাদ থেকে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়েছে অথচ নাইসার অফিস থেকে নয়। হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হওয়ার পর কোনও কম্পিউটারও বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “নাইসা-র অফিস থেকে কোনও হার্ডডিস্ক উদ্ধার হয়নি, হয়েছে ওই সংস্থার প্রাক্তন এক আধিকারিকের বাড়ি থেকে। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। সিবিআই যা বলছে সেটা ঠিক নয়।”
এ কথা শুনে বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, “হতে পারে ওই নথি সঠিক নয়। কিন্তু এসএসসি কী করছিল? তারা নিজেরা কোনও তথ্য রাখেনি।” এসএসসি-র দেওয়া তথ্য বিশ্বাস করেন কি না, আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। উত্তরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “না। আমি সিবিআই-এর নথি এবং তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি।” তথ্য রাখা হয়েছিল কি না, তা কমিশনের কাছেও জানতে চান বিচারপতি। এসএসসি জানায়, সিবিআই যে ডেটা উদ্ধার করেছিল, সেই ডেটার সঙ্গে সার্ভারে রাখা তথ্যের পার্থক্য ছিল। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, অনেক কম নম্বর পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, টাকা নিয়ে চাকরি হয়েছে, সেটা এখনও পর্যন্ত প্রমাণিত নয়। কারাও বাড়িতে টাকা পাওয়া গেল মানেই সবাই অসৎ নয়। তিনি উল্লেখ করেছেন, যাঁর কাছ থেকে হার্ড ডিস্ক পাওয়া গিয়েছে সেই পঙ্কজ বনশল একজন ডাটা অপারেটর। অর্থাৎ তিনি একজন ক্লার্ক। সংস্থার মালিকের কাছে না গিয়ে কেন ওই ব্যক্তির কাছ থেকে হার্ড ডিস্ক সংগ্রহ করা হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন। আইনজীবী বলেন, “মামলাকারীরা এত দেরি করে মামলা করলেন কেন? তাঁরা কি পাঁচিলের ওপর বসে আলোকোজ্জ্বল দিনের অপেক্ষা করছিলেন? তারপর ২০২১ সালে সেই সুদিন এল, সূর্য উঠল আর তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হলেন?”