কলকাতা : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি। পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার। রাজ্য রাজনীতি যখন এই নিয়ে তোলপাড়, তখন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (CAG) একটি রিপোর্ট ঘিরে নতুন করে বিতর্ক বেধেছে। চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত CAG-র ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে (NGO) ২৭ হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক সাহায্য করেছে। পার্থর গ্রেফতারির পর এবার ওই রিপোর্ট নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ, ভোটের সময় NGO-গুলিকে কাজে লাগাতেই ওই আর্থিক সাহায্য করা হয়েছিল।
কী বলছে CAG-র রিপোর্ট?
CAG-র রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বিভিন্ন NGO-কে মোট ২৭ হাজার ৪৮ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাদের আগের অর্থবর্ষে যা ছিল ২৩ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরে এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে NGO-গুলিকে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অন্যান্য’-কে ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে ১০ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যাদের খরচ করা টাকার অডিট করতে পারবে না সরকার, তাদের এত আর্থিক সাহায্য নিয়ে ক্যাগের রিপোর্টে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই CAG-র ওই রিপোর্ট নিয়ে নতুন করে সরব হয়েছে বিরোধীরা। রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এটাও একটা বড় দুর্নীতি। NGO-গুলিকে আর্থিক সাহায্য করে ভোটের সময় কাজে লাগানো হয়েছে।” তদন্ত হলে বড় দুর্নীতি সামনে আসবে বলে দাবি বিজেপির। CAG-র এই রিপোর্ট নিয়ে সরব হয়েছে বামেরাও।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে শাসকদল খুব সহজে নিজেদের দায় ছেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজ বলেন, “আমাদের দল খুব কঠোর দল।” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একইরকম বক্তব্য আউড়ে বলেছেন, “আমরা দুর্নীতির সঙ্গে আপষ করি না।” কিন্তু, CAG-র রিপোর্ট নিয়ে বিরোধীরা রাস্তায় নামলে তার মোকাবিলা করা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। কারণ, সেখানে সরাসরি সরকারের কোষাগার থেকে আর্থিক সাহায্য গিয়েছে। পার্থ-পর্বের পর CAG-র রিপোর্টের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।