কলকাতা : করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের প্রায় বছর দুয়েক পার হয়ে গেলেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নতুন স্ট্রেন। নতুন ভ্যারিয়েন্টের নতুন চরিত্র বুঝে ওঠার আগেই আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। তবে ওমিক্রনের দাপট যখন বেড়েছে, তখন তৈরি হয়েছে অন্য এক সমস্যা। ওমিক্রনের মাঝেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন কেউ কেউ। যেহেতু দুটি আলাদা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে উপসর্গ ও চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা, তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ঠিক সময়ে চিহ্নিত না করা গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে আক্রান্তের। এবার তাই দ্রুত ‘স্ট্রেন’ চিহ্নিত করতে উদ্যোগ নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।
প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে যে তথ্য উঠে আসছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আর ডেল্টা আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ফলে, ডেল্টা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বেশি।
যদি আগে থেকে ‘স্ট্রেন’ চিহ্নিত না করা যায়, তাহলে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ফারাকটা বোঝা যাবে না। ফলে ডেল্টা আক্রান্তদের উপসর্গ তীব্র হতে পারে ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আইসিএমআর অনুমোদিত টেস্ট কিট ওমিশিওর ব্যবহার করতে চায় স্বাস্থ্য দফতর। সেই কিট ব্যবহার করে সহজেই ‘স্ট্রেন’ চিহ্নিত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ডেল্টা না ওমিক্রন, এটা আগেভাগে বোঝা গেলে মৃত্যুর হার কমানো যাবে। তাই স্বাস্থ্য দফতর সেই পরিকাঠামো তৈরি করতে চাইছে যাতে ‘স্ট্রেন’ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
ওমিক্রন আক্রান্তকে চিহ্নিত করা গেলে তাঁকে আইসোলেট করে চিকিৎসা করা হবে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা কম। আবার ডেল্টা আক্রান্তকে চিহ্নিত করতে পারলে, তাঁর জন্য অক্সিজেন সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা যাবে। এতে মৃত্যুর হার কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশ জুড়ে কত মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত, তা নির্ণয় করতে এক বিশেষ সমীক্ষা চালাচ্ছে আইসিএমআর। এবার সেই সমীক্ষার অংশ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গও।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৭৭ শতাংশের বেশি মানুষ আক্রান্ত ওমিক্রনে, বাকিদের শরীরে সংক্রমণ হয়েছে ডেল্টার।
করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেশি বাড়ছে না। তবে গত কয়েকদিনে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রকাশিত বুলেটিনে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। দৈনিক সংক্রমণ ২২ হাজার ৬৪৫। কলকাতায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৬৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমণ ৪ হাজার ১৮। মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।