কলকাতা : সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জের। আর তার কোপ পড়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর উপর। মেটিয়াবুরুজের মিঠাতলা এলাকার বাসিন্দা মুসকান। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। গতরাতে মুসকান ও তার পরিবারের সদস্যদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরেছিল এক ব্যক্তি। শুক্রবার রাতেই তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল এসএসকেএমে। রাতেই পেটে সেলাই পড়ে মুসকানের। কিন্তু তারপর আর চিকিৎসা মেলেনি। এরপর সকালে থেকে ছুটোছুটির পর শেষে TV9 বাংলার সহযোগিতায় তাঁকে ভর্তি করা হয় আর জি করে। এরপর TV9 বাংলাই যোগাযোগহ করে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে। হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় তাঁর। কী অবস্থায় এসেছিলেন সেই ছাত্রী? আর জি করে কী ধরনের আয়োজন করা হয়েছিল তাঁর জন্য? ছাত্রী যখন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখা হয়েছিল? সেই সব কথা তুলে ধরলেন আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জেনারেল সার্জেন রামানুজ মুখোপাধ্যায়।
আর জি কর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে মুসকানকে নিয়ে আসা হয় সকাল ১০ টা নাগাদ। গত সন্ধ্যায় তাঁকে কোপ মারা হয়েছিল। প্রথমেই হাসপাতালের ট্রমা টিম আঘাত লাগার রোগীদের ক্ষেত্রে যা যা দেখা হয়, যেমন পাল্স, রক্ত চাপ, নিঃশ্বাস কীরকম হচ্ছে – সেই সব দেখে নেওয়া হয়। যেহেতু মুসকানের শরীরে দুই জায়গায় কোপ ছিল। একটি তলপেটে। অন্যটি পিঠের দিকে। এ ক্ষেত্রে পেটের মধ্যে আঘাত আছে কি না, সেই বিষয়টি দেখা অন্তন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। কারণ, এসব ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ভিতরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে আঘাত লাগতে পারে। সেই কারণে তখনই একটি সিটি স্ক্যান করা হয় মুসকানের। দেখা যায় মুসকানের রক্ত চাপ ও পাল্স রেট স্থিতিশীল, কথা বার্তা বলতে পারছেন, জ্ঞান আছে, লিখতে পারছেন এবং অক্সিজেনের সাপোর্টও দরকার হচ্ছিল না।
এরপর যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর জন্য ইমার্জেন্সিতে অবজারভেশন ওয়ার্ডে আলাদা একটি ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরাও সহযোগিতা করেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের সঙ্গে। ওই ঘরে একজন ইনভিজিলেটরও ছিলেন। মুসকানের শারীরিক অবস্থার জন্য যা যা মনিটরিং এর দরকার ছিল, সেই সবেরই ব্যবস্থা করা হয় ওই ঘরে। মাল্টি চ্যানেল মনিটর, যাতে সবসময়, পাল্স রেট ও রক্ত চাপের উপর নজর রাখা যায়। এছাড়া ঘরের বাইরে একজন চিকিৎসকও সবসময়ের জন্য বসে ছিলেন। যদি কোনওরকম প্রয়োজন হয় মুসকানের, তার জন্য সদা প্রস্তুত ছিলেন চিকিৎসকরা। এই অবস্থাতেই পরীক্ষা দেন মুসকান। পরীক্ষার শেষে ফের তাঁকে নির্দিষ্ট ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন : TV9 Impact: TV9 বাংলার চেষ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হল মুসকান, মিলল মাধ্যমিক পরীক্ষার সুযোগও