কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College) দেখা গেল এক অভিনব ছবি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলছে ভোট। তবে স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) কোনও অনুমোদন নেই তাতে। অনশন করেও যখনও কোনও কাজ হল না, তখন নিজেদের উদ্যোগেই এই ভোটের ব্যবস্থা করেছেন মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তত্ত্বাবধানেই চলছে সেই নির্বাচন। প্রথমে ধর্নায় বসে কাজ না হওয়ায় একটানা ১২ দিন ধরে অনশনে বসেছিলেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। তারপরও তাঁদের দাবি মেনে ভোটের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। তাই প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই ভোট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ছাত্ররা। গত ডিসেম্বর নির্বাচনের দাবিতে বারো দিন ধরে অনশন আন্দোলনে ছিল মেডিক্যালের চিকিৎসক পড়ুয়ারা।
২০টি আসনে লড়ছেন মোট ৩১ জন প্রার্থী। ভোটার সংখ্যা প্রায় এক হাজার। স্বাস্থ্য প্রশাসন নির্বাচনকে বৈধ বলে মান্যতা দেয়নি। এদিন সকাল থেকে কলেজে রয়েছেন বিনায়ক সেন, সুজাত ভদ্র, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়রা। তাঁদের তত্ত্বাবধানে যে ভাবে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। টিএমসিপি ও ডিএসও এই ভোটে অংশগ্রহণ করেনি। তবে ভোট দেওয়ার লাইন বলে দিচ্ছে, এই ভোট প্রক্রিয়া সমর্থন করছেন বহু পড়ুয়া।
কলেজের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, কলেজের অধ্যক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে ভোট পরিচালনায় প্রশাসনের সক্রিয় কোনও ভূমিকা নেই। এই ভোট হয়ত প্রশাসনিক বৈধতা পাবে না, তবে সরকারি কলেজে যেভাবে বিশিষ্টরা ভোট করিয়ে যাচ্ছেন, তাতে প্রশাসনের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছবে বলেই মনে করছেন পড়ুয়ারা। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে মেডিক্যালের ছাত্র ভোটকে মান্যতা দেওয়ার জন্য সরকারি চিকিৎসকদের তরফে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে আর্জি জানানো হয়েছিল। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য আশ্বাস দেন, এখন না হলেও পরে ভোটের বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করা হবে। এরপরই প্রশাসনকে কার্যত দর্শকাসনে বসিয়ে এদিন কলেজে প্রবেশ করেন বিনায়ক সেনরা।
এক পড়ুয়া বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি অনুমতি নিয়ে ভোট করানোর, ১২ দিন না খেয়ে থাকার পরও কাজ হয়নি। এই ভোট করে মেডিক্যাল কলেজ বুঝিয়ে দিল, তারা কারও চোখ রাঙানিকে ভয় পায়নি, পাবেও না।’ জেনারেল বডি মিটিং থেকেই ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পড়ুয়া।