কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, প্রিন্সিপাল রাতের অন্ধকারে প্রত্যেকের বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন এবং আন্দোলন তুলে নেওয়ার জন্য ভয় দেখাচ্ছেন। মূলত পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বচ্ছ স্টুডেন্ট কাউন্সিল এবং নিরপেক্ষ হোস্টেল কাউন্সিল সহ একাধিক দাবিতে আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পড়ুয়ারা রিলে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রিন্সিপাল পক্ষপাত দুষ্ট আচরণ করছেন এবং অনশন তুলতে তাঁদের উপর চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সেই কারণে তাঁরা অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আজ দুপুরে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিও তোলেন পড়ুয়ারা।
কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে জানানো হয়েছে, রিলে অনশনে শুক্রবার চারজন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠনের দাবি মেনে নিয়ে আমরা আন্দোলন তুলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পড়ুয়ারা অনশন তোলেননি। এই অবস্থায় কী করণীয় তা জানতে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলা হয়। স্বাস্থ্য ভবনের তত্ত্বাবধানে নবান্ন মারফৎ ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছে। তাঁদের ছেলেমেয়েরা অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন, সে কথা বাবা-মা’কে জানাতেই এই পদক্ষেপ বলে দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের। আর জি কর কর্তৃপক্ষের তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘এখন পরিস্থিতি আমাদের হাতের বাইরে। ঘেরাও হয়ে রয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেমন নির্দেশ দেবে, তেমনই করব। আমাদের হাতে আর কিছু নেই।’
অভিযোগ রয়েছে, যে পড়ুয়ারা আর জি করে অনশন করছেন, তাঁদের বাড়িতে পুলিশ মারফৎ ফোন করা হয়েছে। আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৯ জন পড়ুয়ার বাড়িতে ফোন করার জন্য টালা থানার তরফে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপিও ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই ঘটনার পর থেকেই অধ্যক্ষের সঙ্গে আজ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের কথা কাটাকাটি বেঁধে যায়।
কিন্তু কেন অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাইছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন যা অগণতান্ত্রিক। যেখানে অধ্যক্ষের স্বৈরাচারী মনোভাব স্পষ্ট হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “গত ৯ অগস্ট আমরা মিটিংয়ে বসতে চেয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাই। স্যার আমাদের সঙ্গে মিটিং না করায় আমরা অবস্থানে বসতে বাধ্য হই। ১০ অগস্ট আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, দাবিদাওয়া নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হবে। যদিও কোনও অজ্ঞাত কারণে তা হয়নি। আমরা এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বলা হয় যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না এলে কলেজ কাউন্সিলের মিটিং করা যাবে না।”