‘কাকু’ বলছে ‘পেসমেকারের ব্যাটারি খারাপ’, SSKM বলছে ‘ভুল’, কোন রহস্য দানা বাঁধছে ক্রিটিক্যাল কেয়ারে
Sujay Krishna Bhadra: প্রথমে যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে, সেখান থেকে স্থানান্তরের কারণ হিসেবে একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা: কালীঘাটের কাকুর অসুখটা ঠিক কী? আদালতে দু’পক্ষের সওয়াল জবাবে ‘ভদ্রকাকু’র অসুস্থতা ঘিরে নতুন বছরে রহস্য তুঙ্গে। রোমহর্ষক উপন্যাসের মতো কাকুর অসুস্থতার আখ্যান। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জগঠনের ঠিক আগেই ‘গুরুতর অসুস্থ’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বর্তমানে আইসিসিইউ-তে চিকিৎসাধীন তিনি। এসএসকেএম-এর পর এক বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে এবার বাইপাসের ধারের অন্য এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের অসুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের বিচারক। বিচারক জানতে চান, ‘কাকুর কী হয়েছে?’ জবাবে সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, ‘১০ বছরের বেশি হওয়ায় কাকুর পেসমেকারের ব্যাটারি কাজ করছে না।’ আইনজীবীর এই বক্তব্য ঘিরেই তৈরি হয়েছে কাকুর অসুখ-রহস্য।
প্রথমে যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে, সেখান থেকে স্থানান্তরের কারণ হিসেবে একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, কাকুর এখন হৃদরোগজনিত কোনও সমস্যা নেই। অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন। ওই হাসপাতালে শুধুই হৃদরোগ জনিত অসুখের চিকিৎসা হয়। তাই অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রশ্ন হল, কার্ডিওলজি জনিত সমস্যাই যদি নাই থাকে, তাহলে পেসমেকার বিকল হওয়ার কথা আদালতে কেন উল্লেখ করলেন কাকুর আইনজীবী? তাহলে আলিপুরের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে গলদ? সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, ‘সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের পেসমেকারে কোনও সমস্যা নেই। পেসমেকারের এখনও আড়াই বছর মেয়াদ রয়েছে।’ আরও দাবি করা হয়েছে যে পরীক্ষা করে সে কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পেসমেকার কোম্পানি।
২০১১ সালে ‘সেন্ট জুড’ নামে এক সংস্থার পেসমেকার বসানো হয় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হার্টে। বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে থাকাকালীনও পেসমেকার নির্ভর ছিলেন না তিনি, এমনই দাবি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বেসরকারি হাসপাতালের বক্তব্যকে মান্যতা দিচ্ছে এসএসকেএমও।
সোমবার তাঁকে প্রথমে এসএসকেএমেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এসএসকেএম সূত্রের খবর, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রোগীকে দেখে পেসমেকারের পরীক্ষা করানো হয়। এসএসকেএম-এর পরীক্ষাতেও পেসমেকারের কোনও সমস্যা চিহ্নিত হয়নি। ঘটনাক্রমের প্রেক্ষিতে আরও একটি প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেসমেকারে সমস্যার দাবি ভুয়ো হলে কাকু সংজ্ঞাহীন হলেন কেন? সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক পরীক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্টে এ বিষয়ে আদালতকে কী জানানো হয়েছে?
আপাতত, বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ‘কাকু’র তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল তবে সঙ্কটজনক।