কলকাতা : কোনও বোঝাপড়া হয়নি, তাহলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অনুব্রত মণ্ডলরা গ্রেফতার হতেন না। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই সঙ্গে বক্তব্যের শেষে তিনি আরও বলেন, ‘আজও বড় কিছু ঘটতে পারে, আপনারা লক্ষ্য রাখুন।’ একদিকে যখন সল্টলেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে, তারই মধ্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতির এমন মন্তব্য ইঙ্গিতপূর্ণ নাকি নিছকই কথার কথা? সেই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বোঝপড়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রসঙ্গে এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘বোঝাপড়ার কিছু নেই, আমরা আগেই বলেছি। সেটা প্রমাণিতও হয়েছে। দিদি ঘুরে আসার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে গিয়েছেন, দিদির প্রিয় ভাই কেষ্ট জেলে গিয়েছেন।’ তাঁর দাবি, বোঝাপড়া যদি থাকত, তাহলে এই সব লোকেরা জেলে যেতেন না। এ প্রসঙ্গে সুকান্ত আরও বলেন, ‘আগামিদিনে আরও কিছু যাবে বলে মনে হচ্ছে। আজও বড় কিছু ঘটতে পারে, আপনারা লক্ষ্য রাখুন।’
কেন এ দিন সুকান্ত এমন একটা কথা বললেন? কোন বড় ঘটনার ইঙ্গিত তিনি দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর যদি বড় কিছু ঘটেও থাকে, তাহলে সে কথা সুকান্ত মজুমদার জানলেন কী ভাবে? সেই প্রশ্নও রয়ে যাচ্ছে।
সুকান্তর মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘সুকান্তর দলের নেতাই বলেছেন ওঁর কোনও ব্যক্তিত্ব নেই। এদের নজর শুধু ইডি-সিবিআই কী করছে, সে দিকে।’ তৃণমূল নেতার দাবি, রাজ্যে একটা রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে, যার সঙ্গে যুক্ত আছে কেন্দ্রীয় বিজেপি ও রাজ্য বিজেপির কিছু নেতা। তিনি আরও দাবি করেন, সুকান্তদের জনসংযোগ নেই, তাই এ সব কথা লোককে বলে বেড়াচ্ছে। বিজেপি পিছনের দরজা দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি নেতারা প্রতি পদক্ষেপে প্রমাণ করে দিচ্ছেন যে তাঁরা সব জানেন, তাঁদের অনুরোধে হচ্ছে বা স্বার্থে সব হচ্ছে। তাঁরাই আগাম সব বলে দিতে পারছেন।’ এই নেতাদের জন্য ইডি বা সিবিআই-এর বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই এক সভা থেকে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, ফিরহাদ হাকিমকেও জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিজেপি সাংসদের সেই মন্তব্য় নিয়েও ব্যাপক চর্চা হয়। কী ভাবে তিনি এমন একটি মন্তব্য করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ঘাসফুল শিবির। উল্লেখ্য, কয়লা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই মতো শুক্রবার সকাল ১১ টার কিছু আগেই ইডি দফতরে পৌঁছে যান তিনি। আপাতত চলছে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব।