কলকাতা: ১৭ বছর আগে রাজ্য রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল নন্দীগ্রামের আন্দোলন। সেই আন্দোলনে সে দিন যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে সেই নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু। দলবদলের পর তিনি এখন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। নন্দীগ্রামে সে দিন যা হয়েছিল, তার প্রতিচ্ছবিই এবার দেখতে পাচ্ছেন সন্দেশখালিতে, শনিবার দিল্লি যাওয়ার পথে এমনটাই দাবি করলেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে যে সব ইস্যুতে বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছিল, তার মধ্যে অনেক ইস্যুই রয়েছে সন্দেশখালিতেও। তৃণমূল অবশ্য এই তুলনার কথা মানতে নারাজ। আগেই সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এদিন নন্দীগ্রামের সঙ্গে তুলনা করে শুভেন্দু বলেন, “সন্দেশখালিতেও বশ্যতা বিরোধী সংগ্রাম চলছে। নন্দীগ্রামে যে সব ইস্যু ছিল, এখানে সে সবগুলোই আছে। ভোট লুঠ গণতন্ত্র হত্যা, নারী নির্যাতন আর জমি দখল। ওখানে জমি দখলের বিরোধিতায় আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল, এখানে মায়েদের ওপর অত্যাাচারে প্রতিবাদে শুরু আন্দোলন। তবে জমি দখলও এখানে একটা বড় ইস্যু।” বিরোধী দলনেতার দাবি, সন্দেশখালিতে মানুষ বিজেপির ওপর ভরসা করছেন।
সন্দেশখালিকে ‘দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও। যেভাবে এখানে সাধারণ মানুষ নিজের হাতে ঝাণ্ডা তুলে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে নিচ্ছেন, তাতেই নন্দীগ্রামের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ।
শুভেন্দুর কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, “নন্দীগ্রামে যত মানুষ মারা গিয়েছেন, সে বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী দূর থেকে খোঁজ খবর নিতেন। প্রত্যক্ষভাবে কোনও দিন কোনও আন্দোলনে যাননি। আন্দোলনের ব্যাপারে উনি কিছু জানেন না।” তাঁর দাবি, নন্দীগ্রামে সরকারের নির্দেশে জমি দখল হচ্ছিল। সরকারের বিরুদ্ধে তাই আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু সন্দেশখালিতে ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছেন। আগে কুণাল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘সন্দেশখালিতে মানুষ লাঠি-সোটা নিয়ে বিক্ষোভ করছে, কিন্তু একটা ছবি দেখাতে পারবেন না যেখানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস বা গুলি চালিয়েছে। এটা বাম জমানার ট্রিগার হ্যাপি পুলিশ নয়।’