কলকাতা: কিছুতেই যেন থামছে না অশান্তি। এখনও ফুঁসছে সন্দেশখালি। গতকাল বেড়মজুর ঝুপখালি এলাকায় দিনভর দফায় দফায় অশান্তির পর রাতভর এলাকায় মোতায়ন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরইমধ্যে এদিনও ফের দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। তৃণমূল নেতার পরিবারের উপর ‘হামলার’ অভিযোগ। তৃণমূল নেতা বিনয় সর্দারের বাবা ও ভাইকে দেখে তেড়ে যান গ্রামবাসীরা। ২ গ্রামবাসীকে আটকও করেছে পুলিশ। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রিতম সরকার রয়েছেন এলাকায়। গোটা এলাকায় চলছে পুলিশি টহল।
বেড়মজুর এলাকায় কাঠপোল বাজারে পুলিশের তরফ থেকে খোলা হয়েছে অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্র। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫.১৫ পর্যন্ত ৭০ টি কাছাকাছি অভিযোগ জমা পড়েছে এবং যার বেশিরভাগ গুলি জমি সংক্রান্ত বিষয়ের অভিযোগ, খবর পুলিশ সূত্রে।
ক্ষোভ উগরে দিয়ে মীনাক্ষী বলেন, “পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু, শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরারা ১২টা বছর ধরে এটা মানুষের উপর অত্যাচার করেছে। ওদের সঙ্গে এই পুলিশের শাস্তি চাই। মানুষ এখানকার পুলিশের কাছে যায়। পুলিশ তাঁদের শাহজাহান-শিবুদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।”
একদিকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তাঁর ঠিক উল্টোদিকে তখন র্যাফ। আর মহিলা পুলিশ আধিকারিক। সন্দেশখালির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না এই হল পুলিশের মূল দাবি। মীনাক্ষী পুলিশকে প্রশ্ন করছেন, ‘কেন যাব না?’, ‘আমরা কি তাহলে চলে যাব?’ ‘থানায় যাব’, ‘কী করব আরে বলুন কিছু’ ইত্যাদি-ইত্যাদি। কিন্তু পুলিশ ‘স্পিকটি নট’ কোনও উত্তরই দিচ্ছেন না।
বিস্তারিত পড়ুন: Minakshi Mukherjee Sandeshkhali: ‘নখ বড়, নেলপলিশ পরেছে, ছবিটা তোল’, পুলিশের পোশাক দেখেই সন্দেহ মীনাক্ষীর
মাঝেকপাড়ার পর ধামাখালিতে বাধা মীনাক্ষীদের। পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করব। বলছেন বাম নেত্রী।
গ্রামবাসীরা বলছেন তাঁদের আস্থা নেই পুলিশে। সে কারণেই নতুন করে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন। অভিযোগ, এখনও তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মিডিয়ায় কথা বলার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বেড়মজুরের দম্বল পাড়ার ঘটনা এটি। শেখ শাহজাহানের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার মহিলারা।
শনিবার সন্দেশখালিতে গিয়েছেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। প্রথমে কার্যত পুলিশকে ‘ঘোল’ খাইয়ে এলাকায় ঢুকলেও পরে তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না বলেও জানান তাঁরা। এরপরই পর থেকেই পুলিশের সঙ্গে কার্যত উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয় দু’পক্ষের।
বিস্তারিত পড়ুন: Minakshi Mukherjee Sandeshkhali: ‘মীনাক্ষী ব্যাগ সামলাও ওরা অস্ত্র ঢোকাতে পারে…’
“যাঁর যা অভিযোগ আছে সব শোনা হবে। রাম-শ্যাম-যদু-মধু যেই হোক, কেউ যদি জমি দখল করে সে জমি ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।” বলছেন পার্থ ভৌমিক।
পুলিশ ক্যাম্পে সিরাজ ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ অভিজিত সামন্তর। কাঠপোল বাজারে ১ শতক জমি ছিল অভিজিতের। পরিযায়ী শ্রমিক অভিজিতের ১ শতক জায়গা দখল করেছে সিরাজ ডাক্তার, অভিযোগ তেমনই।
সন্দেশখালিতে গিয়ে পৌঁছালেন দুই মন্ত্রী। সেচ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে গ্রামে পার্থ-সুজিতরা। ধামাখালিতে গিয়ে তাঁদের গাড়ি পৌঁছায়। সেখান থেকে লঞ্চে করে নদী পেরিয়ে সন্দেশখালিতে যাবেন।
এদিনই আবার সন্দেশখালি যাচ্ছেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যাচ্ছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও।
পুলিশকে লুকিয়ে সন্দেশখালিতে ঢুকে পড়েন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সন্দেশখালিতে উড়ল লাল পতাকা।
সকাল থেকে এলাকায় টহল দিচ্ছে RAF. মাঠে নেমেছে কমব্যাট ফোর্স। আর যাতে পরিস্থিতি নতুন করে হাতের বাইরে না যায় সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ।
কাঠপোল নতুন বাজার এলাকায় ৩টি সিসিটিভি বসেছে। জোরকদমে চলছে নজরদারি। অভিযোগ শোনার জন্য বসেছে পুলিশের ক্যাম্পা।