কলকাতা : ‘রেফার’ রোগ বহুদিনের। প্রতিদিনই রেফার রোগে কোনও না কোনও প্রাণহানি হয়েই থাকে। ‘রেফার’ রোগ অর্থাৎ, এক হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা না দিয়ে অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে এক সেকেন্ডও গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রেফারের চক্করে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়েই মারা যান বহু মানুষ। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবা পেলেও তখন এতটাই দেরি হয়ে যায় যে কিছু করার থাকে না। সম্প্রতি ‘রেফার’ রোগের শিকার হয়ে মৃত্যু হয় আটমাসের এক শিশুর। আটমাসের শিশুর মৃত্যুতে মানসিক ধাক্কা খেয়েছে চিকিৎসকেরা। এই শিশু মৃত্যুতেই নড়েচড়ে বসল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, রাজ্যের কোনও হাসপাতাল আর রোগীকে রেফার করে দায় সেড়ে ফেলতে পারবে না। রাজ্যের হাসাপাতালের এই ধরনের কর্মকাণ্ড রুখতে কড়া পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য দফতর। উদ্দেশ্য একটাই কড়া হাতে ‘রেফার’ এর কারণে রোগীর মৃত্যু বন্ধ করা। আটমাসের শিশুর মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছিল যে কী কারণে ল্যারিঙ্গোস্কোপির পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও এন আর এসের (NRS) ই এন টি (ENT) বিভাগ আট মাসের শিশুকে সম্প্রতি ফিরিয়ে দিয়েছিল। সূত্রের খবর, শিশু মৃত্যুর পরই এন আর এস কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্তের বিস্তারিত তথ্য স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়েছিল। সেই ঘটনা সহ আরও একাধিক ঘটনার প্রেক্ষিতে এহেন সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য় স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হল?
১.কোনও রোগীকে কোনও একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেই রোগীর চিকিৎসা করার মতো যথাযথ পরিকাঠামো হাসপাতালের না থাকলে দুই চিকিৎসক নিয়ে গঠিত বোর্ড আলোচনা করে তার থেকে উচ্চমানের হাসপাতালে রেফার করতে পারেন।
২. রোগীকে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর আগে তাঁর শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে হবে।
৩. যে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে সেখানে বেড রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. অনলাইনে চিকিৎসকদের ডিউটি রোস্টার তৈরি করতে হবে। কোন কোন চিকিৎসক ডিউটিতে রয়েছেন তা ওপিডি, এমার্জেন্সি, হাসপাতালের নোটিস বোর্ডে আটকাতে হবে।
৫.বিভিন্ন মানের হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়নের জন্য জেলা এবং রাজ্য স্তরে পর্যবেক্ষক দল তৈরি করা হবে। পর্যবেক্ষক দল কোথায় পরিকাঠামোগত খামতি রয়েছে তা যেমন দেখবে তেমন বর্তমান পরিকাঠামোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার হচ্ছে কি না তাও দেখবেন। জেলাস্তরে পর্যবেক্ষক দলের শীর্ষে থাকবেন সিএমওএইচ। রাজ্যস্তরে পর্যবেক্ষক দলের শীর্ষে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিসেস বা এডিএইচএস (ADHS) ব়্যাঙ্কের আধিকারিকরা থাকবেন।
আরও পড়ুন : Samik Bhattacharya : ‘দল ভাঙানোর নেতা হয়ে উঠেছেন মন্ত্রী পার্থ…’, কটাক্ষ শমীকের