ঠাকুরপুকুর: ঠাকুরপুকুরে শিশু মৃত্যুকে ঘিরে একটি বেসরকারি হাসপাতাল তৈরি হল উত্তেজনা। এদিন দফায় দফায় হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা। মা’য়ের বিদায়বেলায় অর্থাৎ বিজয়া দশমীর দিন ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার দাসপাড়ার বাসিন্দা সুপর্ণা দত্ত গর্ভ যন্ত্রণা নিয়ে স্থানীয় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। রাত ৮টা নাগাদ তাঁকে ভর্তি করা হয়। প্রায় ন’টা নাগাদ তার পরিবারের কাছে খবর আসে ‘মা’ হয়েছেন সুপর্ণা দত্ত। এক পুত্র সন্তান হয় তাঁর। কিন্তু বিজয়ার রাত পার হতেই যেন দত্ত পরিবারের আকাশে ঘনিয়ে আসে হতাশার কালো মেঘ। ৬ তারিখ বিকাল নাগাদ মৃত্যু হয় সদ্যজাত শিশুর।
পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতিতেই তাঁরা তাঁদের একরত্তিকে হারিয়েছেন তাঁরা। অবশ্য এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এটেছে। মৃত শিশুর পরিবার থেকে স্থানীয় থানা ও স্বাস্থ্য দফতরেও অভিযোগ জানানো হবে বলে জানা গিয়েছে। মৃত শিশুর ঠাকুমা পুতুল দত্তের দাবি, হাসপাতালে আয়াদের গাফিলতির জেরে মৃত্যু হয়েছে তার নাতির। এই প্রসঙ্গে তাঁরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন বলেই জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে হাসপাতাল তরফে শুরু হয়েছে ময়নাতদন্তের কাজ। তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলে জরুরী ভিত্তি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে দত্ত পরিবার।
এদিকে মৃত সদ্যজাতের পিতা শৌভিক দত্তের দাবি, হাসপাতালের গাফিলতিতে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, “একাদশীর দিন সকালে ১১টার সময় আসি, দেখি বাচ্চাটি নিজের মতোই খেলছে। বেশ সুস্থই ছিল। জন্মের সময় ওর ওজন দু কেজি মতো হয়। কিন্তু বিকাল গড়াতেই যেন সব গন্ডগোল হয়ে যায়। হাসপাতাল তরফে আমার কাছে ফোন আসে। দ্রুত আমাকে ডাকা হয়। সেখানে গিয়ে দেখি, সদ্যজাতের বুকে বারবার চাপ দিয়ে শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক করার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয় না। কারণ ততক্ষণে সব শেষ। হাসপাতালের লোকজন বলছেন দুধ খেতে গিয়ে গলায় আটকে মৃত্যু হয়েছে আমাদের বাচ্চার।” তাঁর আরও দাবি, “প্রথমদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় অস্বীকার করলেও, পরবর্তীত তা তারা স্বীকার করেন। আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা। তা হাতে পেলেই আমরা পরবর্তী ধাপগুলি গ্রহণ করব।”