কলকাতা: দুর্গোৎসব শেষে কার্নিভাল। রেড রোডের সেই কার্নিভালে দেখা গেল খণ্ড খণ্ড মিষ্টি কিছু মুহূর্ত। বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলি শনিবার তাদের প্রতিমা নিয়ে রেড রোডের কার্নিভালে অংশ নেয়। এসেছিল হিন্দুস্তান পার্ক সর্বজনীন। তাদের সঙ্গে ছিল ছোট্ট এক ‘মমতা’। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিতে দেখা যায় তাকে। মমতার মুখোমুখি ছোট্ট মমতা। স্নেহের পরশের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ওই শিশুর হাতে তুলে দেন চকোলেটও। চকোলেট পেয়ে দারুণ খুশি আরুশি চক্রবর্তী নামে ওই শিশু। আধো আধো গলায় নিজেই জানাল, “আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সেজেছি।”
এদিন শোভাযাত্রার ট্যাবলোয় রেড রোডও রঙিন। পুজোর শেষে নাচে, গানে জমজমাট উৎসব। কলকাতার মোট ৯৪ টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করেছে এবারের কার্নিভালে। বিদেশের অতিথিরাও রয়েছেন। রয়েছেন বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যক্তিত্ব।
টলিউডের এক ঝাঁক তারকাকে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মঞ্চে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মোট ৬৫টি পুজো কমিটির প্রতিমা শোভাযাত্রা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে। কার্নিভালে যে সব পুজো কমিটির প্রতিমা অংশ নিয়েছে, তাদের বিসর্জন হয় বাবুঘাট, বাজা কদমতলা ঘাটে।
কলকাতার ৯৪টি পুজো কমিটির প্রতিমাকে সামনে থেকে এদিন দেখার সুযোগ পেলেন কয়েক হাজার মানুষ। টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে পেল গোটা রাজ্য। কলকাতা পুলিশের আওতাধীন এলাকার ৮১টি ও রাজ্য পুলিশের অধীনস্থ এলাকার ১৩টি পুজো এদিনের কার্নিভালে থাকার কথা ছিল। ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিউম্যানিটির তালিকায় বাংলার দুর্গাপুজো স্থান পাওয়ার পর এবং দু’বছরের কোভিড কাঁটা কাটিয়ে এবারের কার্নিভাল ছিল আরও বর্ণময়।
এদিন কলকাতার রামমোহন সম্মিলনীর শোভাযাত্রা এগিয়ে আসতেই আসন থেকে উঠে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পুজোর এবারের থিম ছিল জঙ্গলকন্যা। কার্নিভালে ধামসা, মাদলের দ্রিমি দ্রিমি ছন্দে আদিবাসী কন্যাদের সঙ্গে পা মেলাতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
ভবানীপুর মুক্তদলের প্রতিমা যখন এগিয়ে আসে খোল করতাল সহযোগে গান বাজছিল ‘বৃন্দাবন বিলাসিনী রাই আমাদের’। সে সময়ও আসন ছেড়ে উঠে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে জুন মালিয়া, অদিতি মুন্সী, সায়ন্তিকা, রাজ চক্রবর্তীরা। আদি বালিগঞ্জ সর্বজনীন দুর্গোৎসবের প্রতিমা কার্নিভালে ঢাকের বোলে মাতিয়ে তোলে। একটি ঢাক নিয়ে যাওয়া হয় মঞ্চে। সেই ঢাক কাঁধে তুলে নেন মমতা। তালে তালে ঢাকে বোল তোলেন তিনিও।
এদিন কার্নিভাল উপলক্ষে রেড রোড-সহ ময়দান চত্বরকে ১২টি জ়োনে ভাগ করা হয়। ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা ছিলেন দায়িত্বে। মূল মঞ্চ ও সংলগ্ন এলাকার দায়িত্বে ছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমার ও ডিসি সাইবার প্রবীন প্রকাশ। নজরদারির জন্য ছিল চারটি ওয়াচ টাওয়ার, ১০টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল কুইক রেসপন্স টিম।