কলকাতা: হরিদেবপুরের ঘটনায় পাঁচজনের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত। শনিবার আলিপুর আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। এখনও অবধি এই ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে নিহত অয়ন মণ্ডলের বান্ধবীর ভাই ও ওড়িশার জাজপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া দু’জনই নাবালক। বান্ধবীর ভাইকে হোমে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে ওড়িশা থেকে ধৃত কিশোরকে রিমান্ডে নিয়ে রবিবার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করা হবে।
দশমীর দিন বান্ধবীর বাড়িতে যাচ্ছে বলে বেরিয়েছিলেন হরিদেবপুরের দীনেশপল্লির অয়ন মণ্ডল (২১)। রাত পার করেও বাড়ি ফেরেননি। দু’দিন পর তাঁর দেহ উদ্ধার হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট থেকে। তদন্তে নেমে ক্রমেই চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে। অয়নের সঙ্গে তাঁর ১৯ বছরের বান্ধবী ও বান্ধবীর মায়ের ত্রিকোণ-সম্পর্ক ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় উঠেছে। অয়নের বাবা যেমন সংবাদমাধ্যমের সামনে সে কথা বলেছেন। একইভাবে বান্ধবীর বাবার কথাতেও স্পষ্ট সে কথা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দশমীর দিন বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অয়ন। সেখানে দু’জনের বচসা হয় বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন তাঁর বান্ধবী। অভিযোগ, বান্ধবী, বান্ধবীর মা ও ভাই মিলে অয়নের গায়ে হাতও তোলেন। প্রাথমিক তদন্তে অয়নের মাথায় ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্নও মিলেছে। তাতে অয়নের মৃত্যুর সম্ভাবনাও প্রখর। এরপরই অয়ন মণ্ডলের রহস্যমৃত্যুতে গ্রেফতার করা হয় সাতজনকে। তালিকায় রয়েছেন বান্ধবী, বান্ধবীর মা, বান্ধবীর বাবা, বান্ধবীর ভাই, ভাইয়ের এক বন্ধু ও এক গাড়ির চালক।
এদিন আদালতে মা, মেয়ে ও বাবার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলরা সরাসরি এই ঘটনায় যুক্ত ছিলেন না। তাই তাঁরা জামিন পাওয়ার যোগ্য বলে আর্জি জানান আদালতে। একইসঙ্গে তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানোরও অভিযোগ তোলেন তিনি। অন্যদিকে গাড়ির চালক ও বান্ধবীর ভাইয়ের বন্ধুর আইনজীবীর বক্তব্য, গাড়ির চালক নিজের পেটের দায়ে কাজ করেন।
তাঁকে ডাকা হয় এবং বলা হয়েছিল পয়সার বিনিময়ে কিছু মাল সরাতে হবে। এই কাজ তো গাড়ির চালকরা করেন। কী মাল সেটা কীভাবে একজন গাড়ির চালক বুঝবে বলে প্রশ্ন তুলে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী। একইসঙ্গে ভাইয়ের বন্ধু শুধুমাত্র ফোন করে গাড়ি ডেকেছিল বলে তাঁর আইনজীবী এদিন আদালতে জানান। ফলে সেও ঘটনায় সরাসরি যুক্ত নয় বলে জামিনের আবেদন জানানো হয়। যদিও সরকারি আইনজীবী বলেন, সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, পাঁচজনই সরাসরিভাবে ঘটনায় যুক্ত। তাই তাঁদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন। তাই পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়।