কলকাতা: বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দল সিপিএম। বিরোধীদের মিলিত মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-কে জোট না বলে একটি ব্লক হিসেবেই দেখছে বামেরা। ‘ইন্ডিয়া’-র সমন্বয় কমিটিতেও নিজেদের কোনও প্রতিনিধি না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরিরা। যদিও সিপিআই-এর ডি রাজা রয়েছেন সমন্বয় কমিটিতে। তবে এসবকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ‘ইন্ডিয়া’-র সমন্বয় কমিটির অন্যতম সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে বামেদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করায় অভিষেক বললেন, ‘সিপিএমের কী অবস্থান, তা সিপিএম স্পষ্ট করে বলতে পারবে।’
একইসঙ্গে অভিষেকের আরও সংযোজন, ‘বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা প্রত্যেকটা সম-মনোভাবাপন্ন দলকে স্বাগত জানিয়েছি লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য। তবে সিপিএম বা অন্য রাজনৈতিক দল কী করবে, সেটা তাদের ব্যাপার।’ অর্থাৎ, বুঝিয়ে দিলেন টিম ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটিতে বামেদের না থাকাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না তিনি।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের জন্য যখন কোমর বাঁধছে বিরোধীদের মিলিত মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’, যখন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নীল নকশা তৈরি হচ্ছে… তখন বামেদের অবস্থান, ইন্ডিয়াতে থাকলেও কমিটিতেই নেই। আর এই অবস্থান নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেই দিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলির নেতারা যখন একসঙ্গে বৈঠক করছে, তখন আমরা থাকছি। আসন সমঝোতা কেন্দ্রীয়ভাবে হবে না। রাজ্যভিত্তিক স্তরে হবে।’
এদিকে আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলায় বামেদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চান। বলছেন, আমি ইন্ডিয়া জোটের নেতা না। আমি বাংলার নেতা। সংসদে কংগ্রেসের দায়িত্ব পালন করি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হাতে আমরা আক্রান্ত। তাই আক্রান্ত ও আক্রমণকারীর মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে, আমার সঙ্গেও তৃণমূলের সেই সম্পর্ক।’
প্রাদেশিক রাজনীতির সমীকরণ নিয়ে বিরোধীদের এই টানাপোড়েনে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বঙ্গ বিজেপি শিবিরও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যেমন বলছেন, ‘এই জোটের দলগুলির নীতি বা আদর্শ কিছুই এক নয়। শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে এরা একসঙ্গে হয়েছে। তাই এই জোট চিরস্থায়ী হতে পারে না।’