কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) কলাইকুণ্ডার বৈঠকের আগের রাতে ফোন করে ঠিক কী বলেছিলেন তাঁকে, তা প্রকাশ্যে এনেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Governor Jagdeep Dhankhar)।এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল শিবির। তৃণমূল নেতা সৌগত রায় বললেন, “টুইট করা বন্ধ করুন রাজ্যপাল। এই ধরনের টুইট করার সংবিধানে কোনও জায়গা নেই।” কলাইকুণ্ডার বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বাতিল করেননি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের দাবি তুলে ধরেছেন।”
প্রসঙ্গত, সোমবার মধ্য রাতে টুইট করে রাজ্যপাল দাবি করেছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কলাইকুণ্ডায় রিভিউ বৈঠক ইচ্ছাকৃত ভাবে বয়কট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এমনটা করবেন তার ইঙ্গিত তিনি আগেই দিয়েছিলেন।
ধনখড়ের দাবি, ২৭ মে রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোনে জানিয়েছিলেন, বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকলে, তিনি থাকবেন না। ২৮ মে সেই পরিকল্পনা মতোই মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিব বৈঠক বয়কট করেন। রাজ্যপালের দাবি, বৈঠক সংক্রান্ত বিষয়ে অসত্য কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই পদক্ষেপ অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়েছেন রাজ্যপাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রীয় ঐতিহ্যের পরিপন্থী। দাবি ধনখড়ের।
রাজ্যপাল টুইটে লেখেন, “গত ২৭ মে রাত ১১টা বেজে ১৬ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় একটি মেসেজ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারি? খুব জরুরি’।” তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক বয়কট করার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল লেখেন, “উনি আমায় ফোন করে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ওই বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি সদলে ওই বৈঠক বয়কট করবেন।”
Constrained by false narrative to put record straight: On May 27 at 2316 hrs CM @MamataOfficial messaged “may i talk? urgent”.
Thereafter on phone indicated boycott by her & officials of PM Review Meet #CycloneYaas if LOP @SuvenduWB attends it.
Ego prevailed over Public service
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 31, 2021
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত বার্তা এভাবে রাজ্যপাল প্রকাশ্যে আনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল শিবির। সৌগত রায় বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী কোনও সরকারি আধিকারিক নন। মুখ্যমন্ত্রী তাতে আপত্তি জানাতেই পারেন। কেন তিনি মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে থাকবেন?”
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবের উদ্দেশেও টুইট করেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, ‘দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দীর্ঘ ইতিহাসে ২৮ মে দিনটি ‘কালো দিন’ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় থেকে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকে ধ্বংস হয়েছে দেশের গণতন্ত্র’। এই বিষয়টিও ভালভাবে নেয়নি তৃণমূল। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি সংক্রান্ত যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেটিও প্রতিহিংসামূলক আচরণ বলে উল্লেখ করেন সৌগত রায়। রাজ্যপালের মধ্যরাতে এই টুইট রাজভবন-নবান্ন সম্পর্কে কোনও ছায়াপাত করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।