Madan Mitra: এতবড় দুর্নীতির অভিযোগ! আমাকে বাঁচাতে অন্তরালে সাহায্য করেছেন মমতা: মদন

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Nov 21, 2021 | 4:40 PM

Exclusive Madan Mitra: "রাজীব ব্যানার্জিকে নিয়ে তো কল্যাণ ব্যানার্জি গান গেয়েছেন। শোনাতে চেয়েছেন মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জিকে। ব্যানার্জির গোত্র আলাদা। আমার তো শাণ্ডিল্য গোত্র নয়, আমার গোত্র বিশ্বামিত্র।''

Madan Mitra: এতবড় দুর্নীতির অভিযোগ! আমাকে বাঁচাতে অন্তরালে সাহায্য করেছেন মমতা: মদন
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ

Follow Us

কলকাতা: তিনি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে ‘রঙিন ছেলে’। আবার নিজেকে মমতার ‘অনুগত সৈনিক’, ‘ইমানদার’ বলে জানান মদন মিত্র (Madan Mitra)। সেই ‘রঙিন’ মদনকে বিদ্ধ হতে হয়েছে আর্থিক মামলায় অভিযুক্ত হয়ে, দিন কেটেছে জেলে। ফিরে এসেছেন একুশে। হয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক। কিন্তু মন্ত্রিত্ব নেই। দলের বড় কোনও কোর কমিটিতেও তিনি নেই। প্রশাসনিক বৈঠকে মমতার পাশে বসার সুযোগ-ও নেই। তবু বৈঠকের শেষে তাঁকেই খোঁজেন মমতা। সেটাই তাঁর কাছে বড় পাওনা। দল ও দলবদলু থেকে ঘরওয়াপসি নেতা একের পর এক প্রসঙ্গে অকপট মদন। Tv9 বাংলার ‘কথাবার্তা’ অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিলেন সে কথাই।

দলবদলুদের নিয়ে কী মত মদন মিত্রের? যিনি ভোটের আগে লড়তে চেয়েছিলেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে, যিনি নাম না করে দলত্যাগীদের বিঁধে গদ্দার বলে নিজেকে ইমানদার হিসাবে তুলে ধরেছেন। মদনের কথায়, “যাঁরা চলে গিয়েছেন, আবার ফিরছেন। দল যাঁদের নিচ্ছে না, এর কোনওটারই উত্তর আমি দিতে পারব না। কারণ, যাঁরা গিয়েছিলেন, কেন গিয়েছিলেন, এর উত্তর তাঁরাই বলতে পারবেন। আবার দল কেন তাঁদের নেবে, এই কোর কমিটিতে আমি নেই।”

কিছুটা থেমে মদন আবার বলেন, “এই কোর কমিটির গোত্র আছে। আমার গোত্র বিশ্বামিত্র। কোর কমিটির গোত্রে আমি নেই। অমিত মিত্র বোধহয় ছিলেন। এখন করোনার পর উনি নেই।”

ওই কোর কমিটির গোত্রে কি আপনি ঢুকতে পারেননি? Tv9 বাংলার এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্যের প্রশ্নে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি হেসে প্রাক্তন মন্ত্রীর সাফ উত্তর ‘না’। বলেন, “সেটা হয়ত আমার বডিটা ব্যালেন্সে নেই সে জন্য হতে পারে। একটা রিংয়ের মধ্যে এতগুলো লোকের ঢোকা টাফ না?” স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মন্তব্য মদন গোপাল মিত্রের। বলেন, “এমনি তো আমার এই রকম শরীর হয়ে গেছে। তার উপর কোর কমিটি-তে ঢোকার অনেক রকম প্রবলেম আছে। অনেক দায়িত্ব, সবসময় ব্যস্ত থাকা।”

কিন্তু মদন মিত্র দায়িত্ব নিতে ভয় পান? প্রশ্নে ফের গান ধরলেন মদন। সুরে সুরে বলেন, “আমার নাহি সুখ, নাহি দুখ পরের পানে চাহি… আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ।” আবার তাঁকে কেন মন্ত্রী করা হল না, এ নিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই বলে মদনের প্রশ্ন, শুধু উত্তর ২৪ পরগনা থেকে আর কতজনকে মন্ত্রিপদ দেওয়া যায়!

এদিকে দলবদলুদের দলে জায়গা দেওয়া নিয়েও বিশেষ মন্তব্য করতে চান না প্রক্তন মন্ত্রী। নিজেকে সাধারণ কর্মী বলে দাবি করেন। বলেন, ‘এই অগ্নিপরীক্ষা আমি দিতে পারবা না। আমি জানি না। তবে দল সমৃদ্ধ হচ্ছে।’ তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “আগে ইন্দ্রনীলের মতো গান গাওয়ার লোক ছিল। এখন বাবুল সুপ্রিয় এসে গিয়েছেন। সেখানে ইন্দ্রনীলের চেয়ে বাবুলের গানের পরিধি ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল। সমৃদ্ধ-ই তো বলব। আর রাজীব ব্যানার্জিকে নিয়ে তো কল্যাণ ব্যানার্জি গান গেয়েছেন। শোনাতে চেয়েছেন মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জিকে। ব্যানার্জিদের গোত্র আলাদা। আমার তো শাণ্ডিল্য গোত্র নয়, আমার গোত্র বিশ্বামিত্র।”

মজার ছলে যেন কৌশলেই এইসব প্রশ্ন এড়াতে চাইলেন মদন। জানালেন, অসুস্থ মুকুল রায়কে একদিন দেখতে যাবেন। তার পর যোগ করেন, “কর্ণের যখন রথের চাকা বসে গিয়েছিল অর্জুন তখন মারতে চাননি। কৃষ্ণ বলেছিলেন, এখনই মারো। কারণ চাকা উঠে গেলে আর মারতে পারবে না। তো আমি কর্ণই নয়, অর্জুন নই। আমি কেন গীতার ব্যাখ্যা করতে যাব?”

কিন্তু নিজের খারাপ সময়ে দলকে কাছে পেয়েছিলেন? কখনও মনে হয়নি দলটা ছেড়ে দিই? প্রশ্ন শুনে ফের মুচকি হাসেন মদন। বলেন, পাবলিকলি আমি শুনেছি, আমার ক্রাইসিস পার্টিতে ছিল না। এটা ঠিক নয়। প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এরা দু’ জনেই ছিলেন। তবে সেটা খুব প্রকাশ্যে নয়, গোপনে ছিলেন। কারণ, প্রকাশ্যে তাঁদের পক্ষে একজন আসামি, অভিযুক্ত, তাও আবার অর্থ আত্মসাতে, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত… হাজার হাজার কোটি টাকা … সিঙ্গাপুরে, ব্যাঙ্কককে, সুইটজ়ারল্যান্ডে, সুইজ় ব্যাঙ্কে… তাঁদের পক্ষে প্রকাশ্যে পাশে দাঁড়ানো অসুবিধার ছিল। কিন্তু এঁরা যদি অন্তরাল থেকে না সাহায্য করতেন, তাহলে আমি কী করে বাঁচতাম!”

বিভিন্ন সময় নিজেকে ‘ইমানদার’ বলা কামারহাটির বিধায়কের কথায়, “পার্টির কর্মীরা সবসময় সমর্থন করে গিয়েছেন। ভুলিনি সে সময় আমি শুনেছি, ১০টা ১২টা গাড়ি আগুন জ্বলে গিয়েছে। তাই কেউ পাশে ছিলেন না কখনও বলতে পারব না। মমতা যদি পাশে না থাকতেন আমি কি আবার এমএলএ হতে পারতাম? কিন্তু এটা ঠিক। যুদ্ধ দু’রকম হয়, একটা প্রকাশ্য থেকে, মন্ত্রীলয় থেকে। তবে আমি পার্টির কাছে গ্রেটফুল।”

মদন যেন ঘুরিয়ে বলে দিলেন তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা আর এই বয়সে নেই। তিনি অল্পে খুশি। মন্ত্রী হতে না পারার দুঃখ হয়ত বা আছে। তবে তার জন্য রোদন নেই। ‘এমএম’ ভালই আছেন, জানালেন নিজেই।

আরও পড়ুন: Bharati Ghosh BJP National Spokesperson: বিজেপিতে গুরুত্ব বাড়ল ভারতী ঘোষের, এবার দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র

Next Article